আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, এই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে প্রচারের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দুই সিটির দুই মেয়র প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনতে প্রচার কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা আরও জানান, এই নির্বাচন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও দেশের রাজধানী শহরের দুই সিটি করপোরেশন দল ও সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই দুই সিটি করপোরেশনকে কোনোভাবেই হাত ছাড়া করতে চায় না আওয়ামী লীগ। এ কারণে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছে দলটি।
দলের দুই সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমুকে দক্ষিণ ও তোফায়েল আহমেদকে ডিএনসিসি’র প্রচার কাজে সমন্বয় করার জন্য তাদের নেতৃত্বে দুইটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই দুই নেতা জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের আইনের কারণে সরাসরি প্রচারে অংশ না দিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার এই দুই সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে শুরুতেই মেয়র প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। বিজয় অনিশ্চিত হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে ডিএসসিসি’র মেয়র প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনের পরিবর্তে অধিক স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থী হিসেবে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সাঈদ খোকনকে মনোনয়ন না দেওয়া নির্বাচনে যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সেজন্য গত ১২ জানুয়ারি তাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য করা হয়েছে। জনপ্রীয়তার মাপকাঠিতে এগিয়ে থাকায় ডিএনসিসি’তে মেয়র আতিকুল ইসলাম আতিককেই পুনরায় এ পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই দুই মেয়র প্রার্থীর পক্ষে দুই সিটির আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন বলে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান।
তবে বেশ কিছু কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়েছে দলটি। এই বিদ্রোহী প্রার্থীদের বসিয়ে দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলানো হচ্ছে। ডিএসসিসি’র ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ২৫টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড এবং ডিএনসিসি’তে ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সবগুলোতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বেশ কিছু ওয়ার্ডে দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে উত্তরের ১৪টি ওয়ার্ডে এবং দক্ষিণের ১৭টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। কোনো কোনো ওয়ার্ডে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য আব্দুর রাহমান বাংলানিউজকে বলেন, যারা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন এবং দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন তারাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এর বাইরে দলের যারা নির্বাচন করছেন তাদের বসে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে, বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি, বসছি। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়টি নিয়ে আমরা বসবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছি, নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। তারা আমাদের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন। দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সময় ০৩৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
এসকে/এসআরএস