ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌর নির্বাচন

রাজশাহীতে একাট্টা আ.লীগ, বিদ্রোহ বিএনপিতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৫
রাজশাহীতে একাট্টা আ.লীগ, বিদ্রোহ বিএনপিতে

রাজশাহী: আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের ২৩৪টি পৌরসভার নির্বাচন। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়নের প্রক্রিয়া শেষ করেছে শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দল।



পিছিয়ে নেই বিভাগীয় শহর রাজশাহীও। জেলার ১৩টি পৌরসভার দলীয় মেয়র প্রার্থী কারা তা এখন নিশ্চিত। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে।

মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) রাতে কেন্দ্র থেকে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর পৌর নির্বাচনকে ঘিরে তাই আরও উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। বিশেষ করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ। পৌর নির্বাচনে জয়ের চ্যালেঞ্জে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ভুলে একাট্টা হয়েছেন স্থানীয় নেতারা।    

কিন্তু দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণার পর রাজশাহীর বিএনপি শিবিরে বেজে উঠেছে বিদ্রোহের সুর। এরই মধ্যে অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তার জানান দিয়েছেন।

বুধবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুরেই রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মনোনয়নবঞ্চিত তাহেরপুর পৌর ছাত্রদলের সভাপতি এসএম আরিফুল ইসলাম আরিফ।  

রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসএম আরিফ অভিযোগ করে বলেন, তৃণমূলে প্রার্থী বাছাইয়ে গণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করা হয়নি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ থাকলেও বর্ধিত সভা ডেকে মতামত নেওয়া হয়নি তৃণমূল পর্যায়ের কোনো নেতাকর্মীর।

এমনকি যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়নি। তৃণমূল নেতাদের মতামতের মূল্যায়ন না করেই ঢাকায় বসে দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপির দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ফলে তাদের মতামতের ভিত্তিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দেন তিনি।

এসএম আরিফ দাবি করে বলেন, তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অনেকেই নির্বাচন করবেন। বিভিন্ন পৌরসভার প্রার্থীরা তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর মধ্যে নওহাটা পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, কাটাখালি পৌর বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, আড়ানি পৌর বিএনপির আহবায়ক নজরুল ইসলাম ও তানোর পৌরসভার বর্তমান মেয়র ফিরোজ সরকারও রয়েছেন। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে তাদের বিষয়টিও তুলে ধরতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে এসএম আরিফ দাবি করে বলেন, শিগগিরই তারাও সংবাদ সম্মেলন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আমজাদ হোসেন, পৌর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বকুল হোসাইনসহ স্থানীয় ছাত্রদলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহীর ১৩টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রাপ্তরা হলেন মনিরুল ইসলাম বাবু (গোদাগাড়ি পৌরসভা), আবদুল মজিদ মাস্টার (কাঁকনহাট পৌরসভার বর্তমান মেয়র), ইমরুল হক (তানোর পৌরসভা), তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী (মুণ্ডুমালা পৌরসভার বর্তমান মেয়র), যুবলীগ নেতা আব্বাস আলী (কাটাখালি পৌরসভা), নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারী খান (নওহাটা পৌরসভা), শহীদুজ্জামান শহীদ (কেশরহাট পৌরসভা), উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি (পুঠিয়া পৌরসভা), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন (দুর্গাপুর পৌরসভা), তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ (তাহেরপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র), ভবানীগঞ্জে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক (ভবানীগঞ্জ পৌরসভা), বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল ইসলাম (আড়ানি পৌরসভা), আওয়ামী লীগ নেত্রী নার্গিস বেগম (চারঘাট পৌরসভার বর্তমান মেয়র)।

অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মেয়র আনোয়ারুল ইসলাম (গোদাগাড়ী পৌরসভা),  পৌর বিএনপির সহ সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ (কাঁকনহাট পৌরসভা), তানোর উপজেলা যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান (তানোর পৌরসভা), মুণ্ডুমালা পৌর যুবদল সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কবীর (মুণ্ডুমালা পৌরসভা), সাবেক ছাত্রদল নেতা মাসুদ রানা (কাটাখালি পৌরসভা), নওহাটা পৌর বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন (নওহাটা পৌরসভা), কেশরহাট পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র আলাউদ্দিন আলো (কেশরহাট পৌরসভা), পুঠিয়া পৌর বিএনপির সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ (পুঠিয়া পৌরসভা), সাবেক মেয়র সাইদুর রহমান মন্টু (দুর্গাপুর পৌরসভা), তাহেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. সামছুর রহমান মিন্টু (তাহেরপুর পৌরসভা), ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক (ভবানীগঞ্জ পৌরসভা), চারঘাট পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র বিকুল আলী (চারঘাট পৌরসভা) এবং বাঘার আড়ানি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি তোজাম্মেল হক (আড়ানি পৌরসভা)।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, পৌরসভা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন তারা। তাই তৃণমূল পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে কেন্দ্রে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের তালিকা পাঠিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতেই দলীয় প্রধান চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছেন। এখন জনপ্রিয়তার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রার্থীরা মেয়র পদে জয় নিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫
এসএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।