তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী নায়িকা পপি। চলচ্চিত্রে তার অভিষেক হয়েছিল মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘কুলি’ ছবির মাধ্যমে।
পথ চলার পনের বছরে তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, নিঃসন্দেহে পপির জন্য এক অসামান্য অর্জন। ঢালিউডে যে মর্যাদা পপি পেয়েছেন, তা ধরে রাখতে চান। তাই ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে এসে ছবি করছেন বেছে বেছে। এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ভাল কাজের সঙ্গে থাকতে চাই। আর দর্শক গ্রহণযোগ্য বা ভিন্নধর্মী গল্প ছাড়া অভিনয় করতে আমি এখন আগ্রহী নই। ক্যারিয়ারের একটা সময় গড়পরতা বহু ছবিতেই অভিনয় করেছি। কিন্তু এখন আর তাতে মন সায় দেয় না। ভিন্নধর্মী, শৈল্পিক, নান্দনিক এবং ব্যতিক্রমী গল্পের চলচ্চিত্রগুলোতেই বর্তমানে অভিনয় করছি। আমার কাছে আসা কোনো ছবির প্রস্তাব এলে এখন আগে আমি গল্প আর চরিত্র সম্পর্কে ভালো করে জানার চেষ্টা করি। যদি মনে করি এ ছবিতে কাজ করে আমি তৃপ্তি পাব, তবেই সম্মতি জানাই।
১৯৯৭ সালে ‘কুলি’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখা পপি তার ক্যারিয়ারে পেয়েছেন বহু সুপারহিট ছবির দেখা। প্রথম ছবি ‘কুলি’-তে তিনি অভিনয় করেন ওমর সানীর বিপরীতে। প্রথম ছবিই পায় ব্যবসায়িক সাফল্য। এরপরই মুক্তি পায় সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’। এতে তার বিপরীতে ছিলেন শাকিল খান। এরপর রুবেলের সঙ্গে শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘চারিদিকে বিদ্রোহ’ এবং মান্নার সঙ্গে মনতাজুর রহমান আকবরের পরিচালনায় ‘কে আমার বাবা’ ছবিতে অভিনয় করেন পপি। তবে মান্নার প্রযোজনায় মালেক আফসারী পরিচালিত ‘লাল বাদশা’ ছবিতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে চলে যান পপি। এরপর শুরু হয় পপির একের পর এক ছবিতে অভিনয়। শাকিল খান, ওমরসানী ও মান্না ছাড়াও পপি এ যাবত রিয়াজ, ফেরদৌস, বাপ্পারাজ, আমিন খান, শাকিব খান এবং সবশেষ ইমনের বিপরীতে ছবিতে অভিনয় করেছেন। পপি অভিনীত সর্বশেষ ছবি মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘গার্মেন্টস কন্যা’। আমাদের চলচ্চিত্রের চলতি মন্দ সময়ে ছবিটির ব্যবসায়িক সাফল্য উল্লেখ করার মতোই। লেডি অ্যাকশন ধর্মী এ ছবির মাধ্যমে পপি প্রমাণ করেছেন, তাকে দেখতে এখনো সিনেমা হলে মানুষের ঢল নামে।
বছর খানেক পপির হাতে সেরকম ছবি না আসলেও সাম্প্রতিক সময়ে নির্মাতাদের কাছে আবার তৈরি হয়েছে তার চাহিদা। ‘গার্মেন্টস কন্যা’-এর সাফল্যের পর তার কাছে এসেছে ডজন খানেক ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব। বাছাই-যাচাইয়ের পর ৫টি ছবিতে তিনি অভিনয়ের সম্মতি দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে দেবাশিষ বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘চাইলাম যারে পাইলাম তারে’, সালমান হায়দারের পরিচালনায় ‘দেহ’, মিঠুর পরিচালনায় ‘মন খুঁজে বন্ধন’, রফিক সিকদারের ‘পদ্মাপাড়ের পার্বতী’ ও নাম চূড়ান্ত না হওয়া বাংলাদেশ ভারতের যৌথ প্রযোজনার একটি ছবি। প্রতিটি ছবিতেই প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। এ ছাড়াও পপি অভিনীত নির্মাণাধীন ও মুক্তি প্রতীক্ষীত ছবির মধ্যে আছে ‘শর্টকাটে বড়লোক’, ‘আদরের ভাই’, ‘পৌষ মাসের পিরিতি’,‘জীবন যন্ত্রণা’ প্রভৃতি।
ক্যারিয়ারের নতুন বাঁকে পৌঁছে পপি বলেন, ‘১৫ বছর অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রায় দেড়শ ছবিতে অভিনয় করেছি। যার মধ্যে একশ ছবিই পেয়েছে ব্যবসায়িক সাফল্যের মুখ দেখেছে। এই দীর্ঘ সময় চলচ্চিত্রের অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। মাঝে আমাকে নিয়ে কিছু ব্যক্তি চক্রান্ত করেছিলেন। যার ফলে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলাম। আমি আবারো ফিরে এসেছি। আবার আমি জ্বলে উঠব, প্রেক্ষাগৃহে দর্শক মাতাবো। ’
ঢালিউডে নায়িকা সংকটের এই সময়ে পপির নতুন করে ফেরা আসাটাকে চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট সবাই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন।
বাংলাদেশ সময় : ১৫৪৫, মার্চ ২১, ২০১২
সম্পাদনা : বিপুল হাসান, বিভাগীয় প্রধান (বিনোদন)