নীলফামারী: নীলফামারীর প্রত্যন্ত উপজেলা কিশোরগঞ্জ। সেখানকার বাফলার বিলে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা বেড়েছে।
বাফলার বিলে প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের আগমনে হাজার হাজার বালিহাঁস, পাতিসরালিসহ নানা জাতের পরিযায়ী জলচর পাখির মেলা বসেছে। দল বেধে আসা এসব পাখির ডানার শব্দ আর কলতানে ভোরে ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। স্থানীয়দের অতিথেয়তার ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি মেলবন্ধন যেন এক অঘোষিত পাখির অভয়াশ্রম। নয়নাভিরাম এ জলাশয়ে হাজারও শাপলা ও সাদা পদ্ম ফুল ফুটে স্বর্গীয় রূপ ধারণ করে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন, সাদেকুল ইসলাম জানান, পাখিগুলো শীত প্রধান দেশে টিকতে না পেরে প্রতি বছর শীতে পরিযায়ী হিসেবে এখানে আশ্রয় নেয়। এরপর বসন্তে উত্তরে উড়াল দেয়।
এমন নিরাপদ আবাসস্থলে পানকৌড়ি, চাপাখি, টুনটুনি, বেনেবউ, হাঁড়িচাচা, দোয়েল, শালিক, রাতচরা, কানাবক, সাদা বক, ধূসর বক, মাছরাঙ্গাসহ নাম না জানা অনেক পাখির আনাগোনা চলে নিত্যদিন।
ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখির জলকেলি মানুষকে মুগ্ধ করছে। গোধুলির রঙ ডানায় মেখে পাখিগুলো যার যার মতো আশ্রয় নেয় আশপাশের গাছগাছালি, বাঁশঝাড় ও কুচুরিপানায়। এসব পাখিদের অত্যাচার না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন পাখি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সেতুবন্ধনের সভাপতি আলমগীর হোসেন।
তিনি বলেন, পাখি শিকার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, পাখি শিকার করলে জেল-জরিমানা করা হবে প্রচারসহ বিল এলাকা সরকারিভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলে শীত মৌসুমে পাখির ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করে তিনি।
এছাড়া এলাকাটি একটি সুস্থ বিনোদনের কেন্দ্রস্থল হতে পারে বলে জানান তিনি।
এ কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, একসঙ্গে এতো পাখির আনাগোনা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। পাভিগুলো প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দের বিনোদনের খোরাক জোগানোর পাশাপাশি পুরো এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। বিশেষ করে এ বিলে পাখিদের অন্যতম নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। এছাড়া শিকারিদের হাত থেকে রক্ষায় জনসচেতনতাসহ নানা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
নীলফামারী-৪ আসনের (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান জানান, এলাকার মানুষ পাখির প্রতি একদম সদয়। এখানে কাউকে পাখি শিকার করতে দেওয়া হয় না। তাই পাখি শিকার করতে এখানে আর কেউ আসে না। শিকারিদের হাত থেকে রক্ষায় জনসচেতনতাসহ নানা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
এসআরএস