ঢাকা: বিশ্ব ধরিত্রী দিবস আজ (২২ এপ্রিল)। ‘আমাদের শক্তি, আমাদের পৃথিবী’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে দিবসটি।
প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার অঙ্গীকারে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিই দিবসটির মূল লক্ষ্য।
বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস, বন উজাড়, অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ এবং প্লাস্টিক দূষণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। গবেষণা বলছে, প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ সামুদ্রিক প্রাণী শুধু প্লাস্টিক দূষণের কারণে মারা যাচ্ছে। আশঙ্কার কথা হলো, ২০৫০ সালে সাগরে মাছের চেয়ে বেশি থাকবে প্লাস্টিক।
বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিথিন নিষিদ্ধ করে বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে উদাহরণ স্থাপন করলেও এখনও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহারে লাগাম টানতে পারেনি। উপকূলীয় এলাকায় সীমিত প্রয়োগ থাকলেও সচেতনতার অভাব এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতার কারণে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার থামছে না। প্রতিদিন দেশের ভেতর দিয়ে ৭৩ হাজার টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে গিয়ে পড়ছে, যা বৈশ্বিকভাবে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো জানাচ্ছে, দেশের প্রায় সব নদী ও জলাধারে মাইক্রোপ্লাস্টিকের ভয়াবহ উপস্থিতি মিলেছে। পুরোনো ব্রহ্মপুত্র, সুতাং, পশুর ও বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে লাখ লাখ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা।
গবেষকদের মতে, মাছের পেট, ধানের শীষ এমনকি খাদ্যপণ্যের মধ্যেও পাওয়া যাচ্ছে এ ক্ষতিকর উপাদান।
এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, সরকার চেষ্টা করছে, একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার থেকে মানুষকে সরিয়ে আনতে। পলিথিন শপিং ব্যাগ বন্ধে কাজ করছি। এখন পর্যন্ত সুপারশপে সফল হলেও অন্য জায়গায় আরও কাজ করতে হবে। কারণ পলিথিনের নেতিবাচক দিকগুলো মানুষ জানে না। সেক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টি এবং আইন প্রয়োগের মাধ্যমে পলিথিন ব্যাগসহ একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বন্ধ করার চেষ্টা করব।
বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে তাই অঙ্গীকার হোক, পরিবেশ রক্ষায় প্রতিটি মানুষ হোক দায়িত্বশীল।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৫
এসআইএস