ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

উপকূল থেকে উপকূলে

উত্তাল মেঘনার বুকে বাংলানিউজ

রফিকুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৩
উত্তাল মেঘনার বুকে বাংলানিউজ

মেঘনা নদী, দৌলতখান, ভোলা থেকে: শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাজীপুর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটারের মেঘনা পাড়ি দিয়ে ইলিশ শিকারি জেলেরা ফিরছেন দৌলতখান ঘাটে।

মেঘনার বুকে উত্তাল ঢেউয়ের মাঝেই তারা বাংলানিউজ দেখে জেনে নিলেন দিনের সবশেষ সংবাদ। সরকার আর বিরোধীদলের নেতারা কী বলেছেন? গণজাগরণ মঞ্চের সবশেষ সংবাদ কী? এমন নানা সংবাদ জানলেন তারা।

শেষ বিকেলে হাজীপুর থেকে ছেড়ে আসা ট্রলারটি উত্তাল মেঘনার বুক চিরে এগিয়ে চলেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা নামবে। মেঘনায় তখন ভাটার টান। ট্রলারের গন্তব্য ঠিক রাখাই যেন কঠিন হয়ে পড়ছিলো। ট্রলারে অবস্থানকারী বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট নিউজপোর্টালটি ওপেন করতেই আশপাশে গভীর আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। উৎসুক জেলেদের পড়ে শোনানো হয় বাংলানিউজের সবশেষ সংবাদ। মনে হলো খবরা খবর জানতে পেরে নিজেদের অনেকটা আপডেট ভাবছেন তারা।

জীবিকার প্রয়োজনে দিনরাতের অধিকাংশ সময় নদীতে অবস্থানের কারণে মেঘনায় মাছধরা জেলেদের কাছে পৌঁছায় না রাষ্ট্রের সব খবরা খবর। আগ্রহীরা অনেক আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকেন রাজধানীর খবর জানতে। বাংলানিউজের মাধ্যমে এত সহজে খবর জানার বিষয়টি জেলেরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেন। রাজনীতি এদেরও তাড়া করে। আলাপে বোঝা গেলো, তারাও জানতে চান রাষ্ট্রের সব খবর।       

জেলে ফারুক হোসেন। থাকেন দৌলতখানের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাজীপুরে। দৌলতখান সদরে ফিরছেন বিশেষ কাজে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন,  আমরা বিচ্ছিন্ন চরে থাকি। ওখানে খবরের কাগজ যায় না। টেলিভিশন নেই। খবরা খবর জানতে পারি দৌলতখান এসে। আকাশের মেঘ আর নদীর স্রোতের টান দেখে আবহাওয়ার গতিবিধি বুঝি। বাংলানিউজে এত সহজে খবর জানা যায়, আগে জানা ছিল না।

হাজীপুরের জেলেরা জানান, এই চরের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর জানতে পারেন প্রকৃতির কাছে। জেলেরা বোঝেন ঘোলা পানিতে বড় ইলিশ পাওয়া যায়। আকাশের মেঘ দেখেই তারা বুঝতে পারেন ঝড়ের মাত্রা কেমন হবে। কালো মেঘ আর বাতাসের উল্টাপাল্টা গতি এদেরকে ঘূর্ণিঝড়ের জানান দেয়। চরে রেডক্রিসেন্টের একটি ওয়ারলেস থাকলেও তা অধিকাংশ সময় থাকে বিকল। এভাবেই সারা মৌসুম তথ্য সংকটে ডুবে থাকে এই চরের মানুষজন।

শুধু বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা না থাকায় ভোলা জেলা শহরের সাধারণ মানুষের কাছেও বাংলানিউজ অনেক আগ্রহের। অনেকে নাম শুনেছেন ঠিকই, ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা না থাকায় দেখা হয়নি।

বিকেলে নদী ভাঙনের শিকার বিপন্ন এলাকার খবরটি বাংলানিউজকে জানিয়ে পরের দিনই ‘পুরনো মাটি খোঁজেন হাজারো ওয়াজিউল্লাহ’ শিরোনামের খবরটি বাংলানিউজের প্রথম পাতায় দেখে আনন্দ পান ভোলা শহরের কালিনাথ রায়ের বাজার এলাকার বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম।

খবরটি পড়ে অনলাইন সম্পর্কে সফিকুল ইসলামের ধারণা আরো স্পষ্ট হয়। বুঝতে পারেন বাংলানিউজ হাতের কাছে থাকলে সব খবর মুহূর্তে জানা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেটের যুগ। থ্রিজি আসছে। সবকিছুই হাতের নাগালে। খবরের কাগজের দিন কী তাহলে ফুরিয়ে এলো?’

উপকূলের খবর পাঠককে জানাতে উপকূল ঘুরছেন বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট। লিখছেন ‘উপকূল থেকে উপকূলে’-এর খবর। এখন অবস্থান করছেন ভোলার প্রত্যন্ত জনপদে। দুর্গম এসব জনপদের খবর প্রকাশের মধ্যদিয়ে তথ্য শূন্যতায় ডুবে থাকা মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বাংলানিউজ। কখনো যাত্রীবাহী ট্রলারে, জেলেপল্লিতে, ফেরিঘাটে আবার কখনো মাছ বাজারে।    
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৩
আরআইএম/বিএসডি/এএ/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।