সেই অসম্ভব দৃশ্যটি অবলোকন বাড়ি ফেরার পরেও স্মৃতির সদ্য ক্যানভাসে তার প্রতিচ্ছবি সগৌরবে রাঙিয়ে ওঠে। প্রাণের দোলনায় অনুরণন জাগায়।
লাউয়াছড়ার প্রাকৃতিক স্পটলাইট কখনো পুরাতন হয় না। যতোবার দেখা যায় সবিস্ময়ে নবরূপে তা প্রকাশিত হয়। নিভৃত প্রশান্তির চিরন্তন প্রকৃতিক সৌন্দর্য বলা যায় তাকে। যাকে বারবার দেখলেও পুরাতন হয় না কখনোই। প্রতিটি দেখাতেই থাকে নবীন দৃষ্টি নবীন মুগ্ধতা হয়ে জেগে উঠে প্রাণের গভীর।
লাউয়াছড়ার ভেতর প্রবাহমান রেললাইন। সুদীর্ঘকাল ধরে সিলেট-ঢাকা বা সিলেট-চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ সচল রয়েছে। তবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জন্য এটি এক প্রকারের প্রাকৃতিক শব্দদূষণ। যা সংরক্ষিত চিরসবুজ একটি বনের দুর্লভ বন্যপ্রাণীর জন্য কখনই মঙ্গলজনক হতে পারে না। প্রতি বছর রেলের চাকায় কাটা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় বহু বন্যপ্রাণী।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে এই রেললাইন ধরে হাঁটতে গিয়ে দেখা গেল অন্য অপরূপ দৃশ্যের চিত্রপট! উচ্চ গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে ঠিক স্পটলাইটের মতো করে সূর্যকিরণ ঠিকরে পড়ছে!
এ যেন একটি মঞ্চ! সেখানে একটি টেবিল জুড়ে দেবার অপেক্ষা! যেভাবে ‘স্পটলাইট’ মঞ্চের একটি জায়গাকে গভীরভাবে আলোকোজ্জ্বল করে দর্শকসারির সমস্ত দৃষ্টিকে, কৌতুহলকে আকর্ষণ করে লাউয়াছড়ার প্রাকৃতিক এ স্পটলাইটটিও ঠিক তাই!
কেবল বিস্ময়! অসংখ্য পত্রপল্লবের লালিত সবুজ শরীর জুড়ে সূর্যকিরণের দারুণ এ মাখামাখি লাউয়াছড়া অদেখা এক সৌন্দর্য!
যা মনকে আপনা হতেই ভরিয়ে দেয়; করে তোলে দারুণ স্বস্তিময়! বিকেলের এই প্রাকৃতিক স্পটলাইট উপভোগের জন্য প্রায় এক কিলোমিটার পাড়ি দেয়া পথের ক্লান্তি এ ঝলসে উঠা সৌন্দর্যের কাছে কিছুই নয়।
যেখানটাতে সূর্যকিরণ পড়েছে সেখানটা দারুণ আলোকিত, আর যেখানে সূর্যকিরণ পড়েনি সে পাতাগুলো অনুজ্জ্বল। এ যেন আমাদের জীবনেরই বাস্তব প্রতিফলনের প্রতীক রূপ।
নৈসর্গিক শোভায় বেষ্টিত লাউয়াছড়ায় এমন দৃশ্য প্রকৃতিকে অবাক করে আপনা থেকে প্রতিদিন প্রকাশিত হয়। দৃষ্টি কেবল তাতে জুড়ে দেবার অপেক্ষা!
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৭
বিবিবি/জিপি