লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মাগুরছড়া সংলগ্ন পাকা সড়ক। এই সড়কের ধারেই রয়েছে পরিত্যক্ত একটি ঝুপরি।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে এই সম্মিলিত ফুলগুলোর সৌন্দর্য দারুণভাবে ধরা পড়লো। যেন ওরা আপন এলাকাটিকে প্রস্ফুটিত শক্তি দ্বারা আলোকিত করে রেখেছে।
এরই পাশ দিয়ে নীরবে বয়ে গেছে রেল লাইন। সিলেট-ঢাকা অথবা সিলেট-চট্টগ্রামের ট্রেনগুলো যখন এই পথ ধরে ছুটে যায় তখন বাতাসে নড়াচড়া করে ফুলগুলো। এ প্রয়াস যেন ট্রেনযাত্রীদের স্বাগত জানাবার প্রাকৃতিক উদ্যোগ।
এই ঝুপরির দিকে চোখ পড়লেই দেখা যায় ‘দাদমর্দন’ ফুলগুলো আকাশের দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে আছে। স্বাভাবিক ফুলের মতো নয়। এটি লম্বাটে ধরণের হলুদ রঙের ফুল। অনেকটা কলার ছোট ‘থুর’ এর মতো দেখতে।
এ গাছের নামটির মাঝেই চর্মরোগের কথা লুকিয়ে আছে। দাদ মানেই চামড়ার ফোঁড়, বিস্ফোরণ, প্রতিঘাত ইত্যাদি। আর ফুলটির নামও তাই – ‘দাদমর্দন’। এর পুষ্পিত সৌন্দর্য মনকে আকুল করে তোলে। প্রথম দর্শনেই অপরূপ এ ফুলটির দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।
প্রকৃতি বিষয়ক লেখক, গবেষক সৌরভ মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, এই ফুলটির নাম ‘দাদমর্দন’। এর বৈজ্ঞানিক নাম Senna alata, Syn-Cassia alata. কখনো কখনো ডোবার ধারে, পরিত্যাক্ত জমিতে, খেতের মধ্যবর্তী আলে এবং অনাবাদি স্থানে দাদমর্দন গাছটি আপনা থেকেই জন্মায়।
এর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, দাদমর্দন দ্রুত বর্ধনশীল নরম-কাষ্ঠল গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত এক থেকে দুই মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কাণ্ড পুরু ও হলদেটে। ফুল ফোটার মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি। ডালের আগায় ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার খাড়া ডাঁটায় হলুদ রঙের ফুল নিচ থেকে ওপরের দিকে ফোটে।
ফুলটির ওষুধগুণ সম্পর্কে সৌরভ মাহমুদ বলেন, এ গাছের নামটির মাঝেই যেন চর্মরোগের যন্ত্রণা লুকিয়ে আছে! কারণ আমরা জানি যে – দাদ মানেই চামড়ার ফোঁড়, বিস্ফোরণ, প্রতিঘাত ইত্যাদি। বিশেষত চর্মরোগে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় বলে এই গাছটি ওষুধি গাছ হিসেবে সারাদেশে সুপরিচিত। দাদের বাহ্যিক নিরাময়ের জন্য টাটকা পাতার লেই ব্যবহার করা হয়। দাদ ও পাঁচড়ায় সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪,২০১৭
বিবিবি/বিএস