‘অলকানন্দা’ শব্দটি গেঁথে ছিল মনের কোণে। অপূর্ব এ ফুলটি চেনার আগে থেকেই ফুলের শ্রুতিমধুর নামটির সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠার সুযোগ হয়।
সেদিন শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপকের বাংলো তখন ছিল অলকানন্দার দখলে। অসংখ্য ফুল রয়েছে মাঝারি আকারের ঝোপময় গাছে। পাশে গিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে বারবার। সবুজ-হলুদের মিলিত রূপের শোভা।
বলতে ইচ্ছে করে হলদে সুন্দরী অলকানন্দা। মুখে যেন তার প্রসন্ন হাসি। মায়াবি রূপের ঝলকানি পাতার ভাঁজে ভাঁজে। গন্ধ নেই, তবু দারুণ মোহময়। দেখলে কেবল দেখতেই ইচ্ছে হয়। ফুলের ভেতর একটি ছোট্ট পতঙ্গের কিছুক্ষণের বিশ্রাম দৃশ্যটি দারুণ মনোমুগ্ধকর।
বাংলোর খোলা বারান্দায় বসে প্রকৃতির দিকে চোখ রাখতেই অলকানন্দা নজরে চলে আসে। খুব সহজেই নজর কাড়ে ওরা। ফুলগুলো দেখতে অনেকটা মাইক বা ঘণ্টার মতো। ঘন সবুজ গাছের উপর হলুদময় সুগভীর শোভা। তবে ফুলগুলো গন্ধহীন।
কৃষিবিদ ও ফুলপ্রেমী সুকল্প দাস বলেন, অলকানন্দা ফুলটির ইংরেজি নাম ‘অ্যালামন্ডা’। বৈজ্ঞানিক নাম Allamonda cathertica। বাংলায় একে ‘ঘণ্টালতা’ও বলা হয়। এটি Apocynaceae পরিবারের ফুল। আমাদের দেশে হলুদ রঙের এ ফুলটিই বেশি দেখা যায়। তবে এ ফুলের বেগুনি রঙের আরেকটি প্রজাতি রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এটি মূলত বসন্ত ও গ্রীষ্মকালের ফুল। তবে বর্ষার সময়ও ফুটতে দেখা যায়। ফুলটি প্রায় দু সপ্তাহ খানেক সতেজ থাকে। গাছ বিশ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুলটির আদি নিবাস ব্রাজিল।
খুবই সাধারণ গড়নের ফুলটির বিশেষত্ব লুকিয়ে আছে এর রঙে। উজ্জ্বল টকটকে হলদে বর্ণের পাঁচটি পাপড়ি আর সবুজ পাতার নান্দনিক গঠন সহজেই নজর কাড়তে বাধ্য। কাণ্ড, পাতা ও ডাল ভাঙলে সাদা রঙের ‘কস’ বের হয় বলেও জানান এই কৃষিবিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
বিবিবি/এএ