ভালো করে অনুসন্ধানের পর দেখা গেলো অন্য গাছের আড়ালে একটি মাঝারি আকারের ফুল ভরা গাছ নীরবে দাঁড়িয়ে আছে। গাছটির উচ্চতা প্রায় দশ থেকে বারো মিটার।
স্থানীয় একজনকে এই ফুলগাছের কথা জিজ্ঞেস করতেই ফয়সল আহমেদ নামে ওই যুবক বলে উঠলেন, এটাকে আমরা বড় ‘কাউয়ানিম’ বলি। ফুলটির খুব সুন্দর গন্ধ।
বসন্ত থেকে গ্রীষ্ম অবধি গাছে ফুটে থাকে পাহাড়ি ‘ঘোড়ানিম’ এর। গাছ মাঝারি আকৃতির। গাছের ডালে দশ থেকে বিশ সেন্টিমিটার লম্বা ডাঁটায় ধরে ছোট ছোট সুদৃশ্য বেগুনি ফুল। এ ফুলের পাপড়ি থাকে পাঁচ থেকে ছয়টি। ফুলের মাঝখানে পুংকেশরের একটি গাঢ়-বেগুনি নল আছে।
‘ঘোড়ানিম’ একটি উপকারী বৃক্ষ। হৃদরোগ, বাতরোগ, টাইফেয়েড জ্বর, মাথাব্যাথ, কৃমি ও বাতরোগে নিরাময়ে এই গাছের পাতা ও বাঁকল আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় উপকারী পথ্য বলে জানা যায়। এছাড়াও এই গাছ থেকে তৈরি নিমতেল ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে অত্যন্ত কার্যকর।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এবং উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এর ইংরেজি নাম Indian Lilac এবং বৈজ্ঞানিক নাম Melia Sempervirens । এরা Meliaceae পরিবারের উদ্ভিদ। এটা ইন্ডিয়ান অরিজিন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ যেভাবে ‘নিম’ গাছটি চেনেন ঘোড়ানিমের সঙ্গে ঠিক সেভাবে পরিচয় নেই অনেকেরই। আমাদের দেশে নিম গাছটি অপেক্ষাকৃত সহজলভ্য। এর ফুলগুলো সাদা ও বেগুনি রঙের, খুব সুন্দর। হালকা ঘ্রাণও রয়েছে। তবে এর ফল মানুষের জন্য বিষাক্ত। এই কাঠ খুবই উন্নতমানের। মূলত কাঠের জন্য গাছটি গ্রামাঞ্চলে লাগানো হচ্ছে।
আমাদের নিমের মতোই ঘোড়ানিমেরও ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে। এই নিমের পাতা কীটপতঙ্গ তাড়ানোর জন্য মানুষ ব্যবহার করে বলে জানান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৯
বিবিবি/এএ