বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বন অধিদপ্তর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। এ অভয়ারণ্যগুলো হলো- সুন্দরবনের ডানমারী, চাঁপাই ও দুধমুখী।
হাবিবুন নাহার বলেন, বর্তমানে একটি ডলফিন হত্যা করলে বা কোনোভাবে ধরে মেরে ফেললে একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড, তিন লাখ টাকা জরিমানা অথবা দু’টোই শাস্তি হতে পারে। ডলফিন রক্ষায় নির্দিষ্ট এলাকায় প্রকল্পের আওতায় ২০০ জন কর্মী এবং সাতটি দল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিবেশ রক্ষার জন্য শুধু মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নয় বরং প্রত্যেকের সহযোগিতা প্রয়োজন।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষণ শফিউল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ডলফিন রক্ষার প্রচারণামূলক এ আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মদিনুল আহসান, আইইউসিএন-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রাকিবুল আমিন, পরিবেশ-বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম মঞ্জুরুল হাসান খান খান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) বিল্লাল হোসেন, যুগ্ম সচিব আশরাফুল ইসলাম খুরশিদা ইয়াসমিনসহ বিশিষ্টজনেরা।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনিরুল এইচ খান।
এতে সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বন সংরক্ষক শফিউল আলম চৌধুরী বলেন, একটি জাতির ইন্ডিকেটর হচ্ছে ডলফিন। একটি দেশে কী পরিমাণ ডলফিন আছে তার ওপর নির্ভর করে সেই জাতিকে তাদের পরিবেশ ও আচার ব্যবহারের দিক থেকে বাইরের দেশগুলো চিনে থাকে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে যে বাদ দেওয়া হচ্ছিল, সেটিও আপাতত স্থগিত আছে সুন্দরবনে বাঘ, বৃক্ষ এবং ডলফিন বাড়ার কারণে।
তিনি বলেন, ডলফিনকে জাতীয় জলজ প্রাণী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। খুব শিগগিরই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, মিঠাপানির বৈশ্বিক সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ডলফিন পাওয়া যায় বাংলাদেশে। বাংলাদেশে প্রায় ৯ প্রজাতির ডলফিন রয়েছে।
এছাড়া ডলফিন রক্ষার জন্য জনসচেতনতা তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ডলফিন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ডলফিন রক্ষার জন্য আমাদের পরিবেশের পাশাপাশি নদীর পানিও রক্ষা করা উচিত। এছাড়া শুধু প্রকৃতি নয়, আমাদের প্রকৃতির আবাসস্থলও সংরক্ষণ করতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি এসব বিষয়গুলোর ওপরে আইন প্রণয়নও একটি জরুরি বিষয়।
ডলফিন সংরক্ষণের প্রচারণামূলক তিন দিনের এ আয়োজনে প্রতিদিন ঘুড়ি উৎসব, বায়োস্কোপ, চিত্র প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, সুন্দরবনের মাওয়ালিদের গল্পসহ বিভিন্ন আয়োজন রাখা হয়েছে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ দর্শকদের জন্য। আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৯
এইচএমএস/আরবি/