ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

রাজশাহীতে আবারও শৈত্যপ্রবাহ, দুর্ভোগ বাড়ছেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
রাজশাহীতে আবারও শৈত্যপ্রবাহ, দুর্ভোগ বাড়ছেই আগুন পোহাচ্ছে শীতার্তরা, ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: সামান্য বিরতি দিয়ে রাজশাহীর ওপর দিয়ে আবারও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিন সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৫১ শতাংশ। এর দুই দিন আগে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে এক লাফে তাপমাত্রা নেমেছে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তাই কনকনে শীতের সঙ্গে উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাসে বিপর্যস্ত জনজীবন। সকালে ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে ভোরের সূর্যের দেখা মিলছে ঠিকই কিন্তু সেই সূর্যের সেই উত্তাপ রোববার পদ্মাপাড়ের শীতার্ত মানুষের শরীরে উষ্ণতা ছড়াতে পারেনি।

সকালের দিকে ঠাণ্ডা বাতাস ছিলো না। তবে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আবারও বইছে হিম বাতাস। এতে শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্টে রাত-যাপন করছেন ছিন্নমূল মানুষগুলো। অনেকে খড়খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।

রাজশাহী আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১১ জানুয়ারি) থেকে রাজশাহীতে তাপমাত্রা কমতে থাকে। এদিন রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ৫ জানুয়ারি তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়।

৬ জানুয়ারি তাপমাত্রা এক লাফে প্রায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। ৭ জানুয়ারি তাপমাত্রা ১ দশমিক ৩ ডিগ্রি বেড়ে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। পরদিন ৮ জানুয়ারি তাপমাত্রা আবারও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

৯ জানুয়ারি থেকে তাপমাত্রা আবারও বাড়তে থাকে। এদিন দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১০ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী আবহাওয়া দফতরের আবহাওয়াবিদ নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন রাজশাহীতে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে ছিলো। কিন্তু রোববার থেকে রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে বয়ে যাচ্ছে। ফলে তীব্র অনুভূত হচ্ছে। আগামী দুই-তিনদিন রাজশাহীসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এ পরিস্থিতি বিরাজ করবে।

তিনি আরও জানান, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৬-৮ ডিগ্রির মধ্যে অবস্থান করলে মাঝারি এবং ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে।

শীতের তীব্রতায় রাজশাহী অঞ্চলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবী মধ্য-নিম্নআয়ের মানুষ। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে হচ্ছে তাদের। প্রতিদিন সন্ধ্যার নামার পর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ দোকানপাট ও হাট-বাজার। গ্রামগুলোতে শীতের প্রকোপ আরও বেশি।

এদিকে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে নবজাতক শিশু এবং বয়স্ক মানুষ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস জানান, তীব্র শীতের ফলে অনেক নবজাতক নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, কোল্ড ডায়রিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।