ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পেঁচার চোখ ঘিরেই নামকরণ ‘আউল মথ’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৩ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২০
পেঁচার চোখ ঘিরেই নামকরণ ‘আউল মথ’ নিশাচর ‘আউল মথ’। ছবি: সুলতান আহমেদ

মৌলভীবাজার: প্রজাপতির মতো দেখতে। তবে প্রজাপতি নয়; এগুলো হলো মথ। এরা নিশাচর পতঙ্গ। রাত নেমে এলেই তারা ডানা মেলে প্রকৃতিতে। সম্মিলিতভাবে খাদ্য সংগ্রহে বের হয়। খাদ্যশৃংখলে অন্যের খাবারেও পরিণত হয় নিশাচর ‘মথ’। নিজেরা খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে পেঁচা, ব্যাঙ, বিড়ালসহ নিশাচর প্রাণীর মুখবন্দি হয়।

এ ছবি সম্প্রতি ২২ জুন চাঁদপুর থেকে তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বন্যপ্রাণীর শাখার শিক্ষার্থী এবং গ্লোবাল ইয়ুথ বায়োডাইভারসিটি নেটওয়ার্কের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সমন্বয়কারী সুলতান আহমেদ।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এর ইংরেজি নাম Owl Moth. বাংলা করলে ‘পেঁচা মথ’ এ রকম জাতীয় কিছু একটা হতে পারে।

Erebidae পরিবারে ২ প্রজাতির মথ পাওয়া যায়। যার মধ্যে Erebus ephesperis একটি। এই পরিবারের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট আছে যার কারণে অন্য সব মথ থেকে এটি সহজেই আলাদা করে চেনা যায়।

এর আকৃতি সম্পর্কে সুলতান বলেন, মথটি ডানা মেলে থাকা অবস্থায় দূর থেকে দেখলে হঠাৎ একটি পেঁচা চোখ মেলে তাকিয়ে আছে এমন দৃষ্টিভ্রম হয়। এটি এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশসহ ভারত, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে চট্টগ্রাম বিভাগে ২০১৮ সালে প্রথম হাজারিখিল উপজেলায় পাওয়া যায়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। এরা নিশাচর হয়ে থাকে। এরা প্রধানত ফলের রস, বিভিন্ন গাছের পাতা খেয়ে থাকে বলে জানান তিনি।

মথের শরীর স্পর্শ করা সম্পর্কে সুলতান আহমেদ বলেন, আমাদের বাড়ির আশেপাশে প্রচুর গাছপালা থাকায় মোটামুটি জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ, প্রতিদিন এ ঘরের আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, প্রজাতির আসে। লাইটের আলোতে প্রতিদিন বেশকিছু পোকামাকড় এবং মথ চলে আসে। আর এ মথগুলোকে খেতে আসে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এভাবেই ২২ জুনের সন্ধ্যায় এই মথটি আমার রুমে চলে আসে। সামনে হাত দিলে, হাতে উঠে, পরে প্রজাতি শনাক্ত করার জন্য বেশ কয়টি ছবি তুলে মথটি বাইরে ছেড়ে দেই।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষক মো. মনোয়ার হোসেন মথ সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, মথ পরাগায়নে সাহায্য করার পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতিসাধনও করে। এরা বনের পাতাসহ কৃষকের উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্যের পাতাগুলো খেয়ে ধ্বংস করে ফেলে; ফলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে পজিটিভ সাইট হলো-এরা খাদ্যশৃংখল নিয়ন্ত্রণে করে অর্থাৎ নিজে অন্যের প্রাণীর খাবারে পরিণত হয়। আরেকটি পজিটিভ দিক হলো- এরা পরাগায়নে ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশ যেহেতু কৃষিপ্রধান দেশ তাই কৃষক অর্থাৎ কৃষিজাত পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হওয়ায় তুলনামূলক এর নেগেটিভ সাইটটা বেশি বলেও জানান জাবির অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২০
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।