ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পাবনায় দুটি মেছোবাঘ আটক, আতঙ্কে পিটিয়ে মারলো একটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২০
পাবনায় দুটি মেছোবাঘ আটক, আতঙ্কে পিটিয়ে মারলো একটি মেছোবাঘ। ছবি: বাংলানিউজ

পাবনা: পাবনার চাটমোহর উপজেলায় দুটি মেছোবাঘ আটক করেছে এলাকাবাসী। এসময় মেছোবাঘের আক্রমণে আহত হয়েছেন চার জন।

ফলে আতঙ্কিত হয়ে একটি মেছোবাঘ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে এলাকাবাসী।

শুক্রবার (২ অক্টোবর) উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বামন গ্রামের বাসিন্দা মাহাবুব মোর্শেদ বাংলানিউজকে জানান, কয়েকদিন ধরে বামন গ্রামের গোরস্থান এলাকায় দু’টি মেছোবাঘের দেখা মেলে। ইতোমধ্যে বেশকিছু মুরগি ও একটি ছাগল ধরে খেয়েছে মেছোবাঘ। এরপর থেকে গ্রামের মানুষের মধ্যে ‘বাঘ’ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।  

শুক্রবার সকালে মেছোবাঘ দেখা গেলে গ্রামবাসী একজোট হয়ে গোরস্থান ঘিরে ফেলে। তারপর বিভিন্ন কৌশলে মেছোবাঘ দুটি আটক করতে সক্ষম হয় এলাকাবাসী। এ সময় মেছোবাঘের আক্রমণে চার জন আহত হয়। পরে আতঙ্কিত এলাকাবাসীর পিটুনিতে একটি মারা যায়।  

প্রাথমিক পর্যায়ে মেছোবাঘ দুটি উদ্ধার করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে নিয়ে যায়। মেছোবাঘ ধরার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ দেখতে ভিড় করে।

ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীর উদ্দিন মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে মেছোবাঘ না মেরে উদ্ধার করে পরিষদে নিয়ে আসতে বলি। একটি মেছোবাঘ আনার সময় পথে মারা যায়। মেছোবাঘের আক্রমণে চার জন আহত হয়েছে।  

আহতরা হলেন- বামনগ্রামের ইছা বিশ্বাসের ছেলে লিটন বিশ্বাস (৩৫), মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে এনামুল হক (২৩), ইসমাইল হোসেনের ছেলে মহিদুল ইসলাম (২৮) ও আফসার আলীর ছেলে আনিছ (৩০)। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।  

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈকত ইসলাম জানান, সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করে আহতদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। মেছোবাঘকে পিটিয়ে মারা হলে বনবিভাগের সঙ্গে কথা বলে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।

পাবনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, পাবনার বন্যপ্রাণী বিষয়ক সংগঠন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটির মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি জীবিত মেছোবাঘ উদ্ধার করেছি। অন্যটি মারা গেছে। উদ্ধার মেছোবাঘ কিছুটা আহত। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর সুন্দর পরিবেশ দেখে অবমুক্ত করা হবে।

পাবনার বন্যপ্রাণী বিষয়ক সংগঠন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটির সভাপতি এহসান আলী বিশ্বাস লিঠু জানান, এটি মূলত বিপন্ন প্রজাতির মেছো বিড়াল বা বাঘরোল। কিন্তু অনেকেই এটিকে মেছোবাঘ বলে ডাকেন। এরা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। ক্রমেই তাদের বসবাসের জায়গা কমে আসায় অনেক সময় লোকালয়ে তাদের দেখা যায়। এদের রক্ষা করতে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।