ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

জলচর পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচিরে মুখর ‘বাইক্কা বিল’ 

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২১
জলচর পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচিরে মুখর ‘বাইক্কা বিল’  বাইক্কা বিলে উড়ে যাচ্ছে রাজ সরালি হাঁস। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: দুপুরের নিস্তব্ধতাকে ভাঙছে পাখির ডাক! তবে গাছে বসে থাকা দু-চারটি পাখি নয় এরা। ঝাঁক বেঁধে পানিতে বসে থাকা সেই অগণন পাখিরাই ভরিয়ে রেখেছে এখানের শান্ত প্রকৃতি।

নৈসর্গিক জলাভূমির এই নয়নাভিরাম দৃশ্যপট যেন সেই সুদূরের দেশগুলো থেকে উড়ে আসা পাখিদেরই একমাত্র অবদান।

বাইক্কা বিলে প্রবেশেই আগেই টের পাওয়া যায় সম্মিলিত জলচর পাখিদের সেই কিচিরমিচির ধ্বনি। হৃদয় তখন আকুল হয়ে উঠে। দৃষ্টি বারবার ফিরে যেতে চায় সেই স্বর্গময় সৌন্দর্যের ভেতর। যার বর্ণনা শুধুই বর্ণনাতীত!

সাম্প্রতিক সময়ের এক মধাহ্নপ্রহর তখন পাখিময়। প্রতিটি ডাকে ডাকে ছড়াচ্ছে সুগভীর সৌন্দর্য। তার ভেতরে দূরবীক্ষণ যন্ত্রে এক চোখ রেখে একটুখানি ঘুরতেই পরিযায়ীদের মেলা! একে একে দৃষ্টিসীমায় ধরা পড়ে-রাজ সরালি (Fulvous Whistling Duck), গিরিয়া হাঁস (Garganey), উত্তুরে-ল্যাঞ্জাহাঁস (Northern Pintail), মরচেরং ভুতিহাঁস (Ferruginous Duck), বালিহাঁস (Cotton Pygmy-goose) প্রভৃতি হাঁসেদের দারুণ শোভা।

এছাড়াও খয়রা-কাস্তেচরা (Glossy Ibis), কালোমাথা-কাস্তেচরা (Black-headed Ibis), লালচে বক (Purple Heron), ধুপনি বক (Grey Heron), পাতি কুট বা কালো কুট (Eurasian Coot) প্রভৃতি জলজ পাখিরা তাদের মনোমুগ্ধকর গভীর সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিয়েছে সেখানে। হঠাৎ করে তাদের উড়ে যাওয়ার দৃশ্য কয়েকগুণ সৌন্দর্য মুহূর্তে দখল করে।

কর্তৃপক্ষের সজাগের অভাবে অল্প সংখ্যায় কোনো কোনো অসচেতন পর্যটকদের ফেলে দেওয়া পানির বোতল, বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের মোড়ক সৌন্দর্যহানি ঘটিয়েছে এখানে।

বাইক্কা বিল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বড়গাঙ্গিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংগঠন। এই সংগঠের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মিন্নত আলী বাংলানিউজকে বলেন, পাখিরাই বাইক্কা বিলের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য। এ জলাভূমির আয়তন প্রায় ১৭০ হেক্টর। প্রতি বছর শীতকালে পৃথিবীর নানা প্রাপ্ত থেকে পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পরিযায়ী পাখিরা দেখতে যেমন সুন্দর, তেমন শ্রুতিমধুর তাদের কলকাকলি।  

দৈনিক অর্ধশত থেকে প্রায় শতাধিক পর্যটক বাইক্কা বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। শুক্রবার এবং শনিবারে সেই সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রবেশ-ফি দেওয়া অনুমতি মেলে ভেতরে প্রবেশের বলে জানান মিন্নত।

সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজের (সিএনআরএস) সাইড অফিসার মো. মুনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আশা করা যাচ্ছে এবার বাইক্কা বিলে পাখি ভালোই এসেছে। তবে কি পরিমাণে এসেছে এটা পরিসংখ্যা ছাড়া সেভাবে বলা সম্ভব নয়। আমরা আশা করছি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২১
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।