ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সুন্দরবন রক্ষা করা যাবে: সুলতানা কামাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সুন্দরবন রক্ষা করা যাবে: সুলতানা কামাল সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা

ঢাকা: অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র ও পরিবেশ হুমকির মুখে। সুন্দরবন রক্ষা করতে হলে শিল্পের পরিশোধিত বর্জ্য ব্যবস্থা করতে হবে।

সমুদ্র থেকে যে লবণাক্ত পানি সুন্দরবনে প্রবেশ করছে, এসব পানি প্রাণী ও গাছের মধ্যে ঢুকছে। ফলে গাছপালা ও প্রাণীর ক্ষতি হচ্ছে। সুন্দরবনের আশেপাশে শিল্পের বর্জ্য যাতে সঠিকভাবে পরিশোধন করে ছাড়া হয়, এটা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে। ফলে সুন্দরবন রক্ষা করা যাবে।

সুন্দরবন দিবস ২০২১ উপলক্ষে রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি’র যৌথ উদ্যোগে 'সুন্দরবন দিবসে সুন্দরবন রক্ষায় ইস্তেহার পাঠ' শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি সুলতানা কামাল একথা বলেন।

তিনি বলেন, সুন্দরবন দক্ষিণ এশিয়ার ফুসফুস। সকল দূষিত বায়ু নিয়ে সুন্দরবন আমাদের নির্মল বায়ু উপহার দেয়। সুন্দরবন রক্ষায় কিছু অর্বাচীন পদক্ষেপ রয়েছে, এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। রামপাল বিদ্যুৎসহ অপরিকল্পিত শিল্পায়ন গড়ে উঠছে। এসবের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিকভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবন আমাদের কিভাবে রক্ষা করে, সুতরাং সুন্দরবন রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সুন্দরবন রক্ষার কথা বঙ্গবন্ধুও বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশ পরিচালনা করছেন, বঙ্গবন্ধুর কথা উপলব্ধি করে সুন্দরবন রক্ষায় চুড়ান্ত পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেবেন বলে আশা করি।

সুলতানা কামাল বলেন, মানুষের জীবন নির্ভর করে প্রকৃতির উপর, এটা বুঝার ব্যাপার রয়েছে। এটা বুঝতে পারলে প্রকৃতির প্রতি সুন্দর আচরণ করবে সবাই। পরে তিনি সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তিনি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন রক্ষায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। কারণ রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া অপরিকল্পিত শিল্পায়ন বন্ধ করা সম্ভব নয়। সেখানে অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে জীব বৈচিত্র ও গাছপালা হুমকির সম্মুখীন। শিল্পের পরিকল্পিত বর্জ্য শোধানাগার করতে হবে। তাহলে অনেকটাই সুন্দরবনের সমস্যা সমাধান হবে।  

সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল মতিন বলেন, শিল্প কারখানায় বায়ু দুষণের ফলে সুন্দরবন হুমকির মুখে। সুন্দরবন আমাদের মায়ের মতো। সুন্দরবনকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন অপরিকল্পিত শিল্পায়ন বন্ধ। এছাড়া গাছপালা নিধন ও প্রাণি শিকার বন্ধ করতে হবে।

বাপার বন, জীববৈচিত্র, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জ্বালানী বিষয়ক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ২৪০ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে সাড়ে ছয় হাজার কিলোমিটার। সুন্দরবন আর এক কিলোমিটার কমে যাক, আমরা চাই না। বন্যপ্রাণী রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। স্থানীয়দের জীবিকার অন্য উপায় বের করতে হবে।

বাপার সংগঠক শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও অংশ নেন জেন্ডার ও পরিবেশ বিষয়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শারমীন মুরশিদ, বাপার অস্ট্রেলিয়া চাপ্টারের সংগঠক কামরুল হাসান খান, গ্রীণ ভয়েসের আলমগীর কবির, বাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহিদুল হক খান ও বাপার কক্সবাজার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
টিএম/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।