নাটোর: দুটি সাপের যৌন মিলনকে বলা হয়ে থাকে সাধারণত শঙ্খ লাগা বা সাপের ভালোবাসা। তবে এটি খুবই বিরল দৃশ্য।
গত রোববার (২১ মার্চ) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার পেড়াবাড়িয়া-লক্ষণহাটী কবরস্থান এলাকার একটি ডোবায় দুটি সাপের শঙ্খ লাগা দৃশ্য দেখতে পান এলাকার মানুষ। এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক মানুষ ঘটনাস্থলে এসে ভিড় জমাতে থাকেন। একসঙ্গে উপভোগ করেন দুই সাপের ভালোবাসা।
বাগাতিপাড়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র ইউসুফ আলী এমন খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, রোববার (২১ মার্চ) বিকেলে পৌর এলাকার পেড়াবাড়িয়া-লক্ষণহাটী গোরস্থান এলাকায় দুটি দাঁড়াশ সাপের শঙ্খ লাগার দৃশ্য দেখা যায়। সেই সময় দু’টি সাপ নিজেদের জড়িয়ে অনেক উঁচুতে লাফালাফি, জড়াজড়ি করে। সাপের শঙ্খ লাগার খবর ছড়িয়ে পড়লে চারিদিক থেকে উৎসুক মানুষের ভিড় জমতে থাকে সেখানে।
এর বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা না থাকলেও সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীরা সাপের এ ‘যৌন মিলনকে ‘মঙ্গলজনক’ বা ‘শুভ চিহ্ন’ হিসেবে মনে করেন। কারো কারো মতে, এমন দৃশ্য চোখে পড়লে সন্তান বাসনা পূরণ হয়। কারো মতে শঙ্খ লাগলে বৃষ্টিপাত হয়। আবার অনেকের ধারণা বা বিশ্বাস সাপের শঙ্খ লাগা স্থানে নতুন কাপড় বিছিয়ে রেখে ওই কাপড় যত্ন করে রাখলে সংসারে লক্ষ্মীর সমদৃষ্টি পড়ে।
তবে প্রাণীবিদদের মতে এ ধরনের ধারণা বা বিশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই। সাপের শঙ্খ লাগা একটি সাধারণ ও প্রাকৃতিক বিষয়। প্রজননের ঋতু ছাড়াও অন্য সময়ে তিন বা তার বেশি সাপের শঙ্খ লাগে। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় খেলার ছলে কিংবা আপন পৌরষত্ব জাহির করার জন্য দুটি পুরুষ সাপও শঙ্খ লাগে।
প্রতিদ্বন্দ্বী দু’টি পুরুষ সাপের মধ্যে এ লড়াই হয়। এ অঞ্চলে কেবল দাঁড়াশ সাপই ‘যুদ্ধ নাচ’ দেখায়। তখন এরা পরস্পর দেহের অর্ধেক রশির মতো পেঁচিয়ে মাটির সমান্তরালে অথবা কিছুটা উপরে থাকে।
নাটোর এনএস সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে সাপের প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে যৌন মিলনে উদ্দিপ্ত করে এবং প্রেমের বা ভালো লাগার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। কেবল তখনই সাপেরা মিলিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২১
আরএ