ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সাগরে মিলছে বড় ইলিশ, ঘাটে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
সাগরে মিলছে বড় ইলিশ, ঘাটে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা

ভোলা: গত এক সপ্তাহ ধরে জেলেদের জালে যেসব মাছ ধরা পড়ছে, সেগুলোর বেশিরভাগেরই ওজন দুই থেকে তিন কেজি।  জেলেরা বলছেন, এতো বড় বড় ইলিশ বহু বছর পর ধরা পড়ছে জালে।

 
 
ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে জেলেদের। সরগরম হয়ে উঠেছে আড়তগুলো।  বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন জেলেরা।

উপকূলের একেকটি ঘাটে দিনে অর্ধকোটি থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ইলিশ কেনা-বেচা হচ্ছে।

সাগর উপকূলের বেশ কয়েকটি ঘাট ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ৬৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকার পর প্রায় এক মাস তেমন ইলিশ পাননি সাগরের জেলেরা। এতে কিছুটা হতাশ থাকলেও এখন আর ঘাটে সেই চিত্র নেই। এক সপ্তাহ ধরে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাচ্ছেন জেলেরা। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ ইলিশই অনেক বড়।

ভোলার চরফ্যাশনের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্লুইস ঘাট ও লালমোহনের বাতির খাল ঘুরে দেখা গেছে, কেউ বরফ ভাঙছেন, কেউ ইলিশ তুলছেন ঝুড়িতে। সাগর থেকে ছুটে আসছে বড় বড় ফিশিং বোট এবং ট্রলার। ইলিশ বিক্রির জন্য তোলা হচ্ছে আড়তে। তারপর ডাক দেওয়ার পর ইলিশ ওজন দেওয়া থেকে মোড়কজাত চলছে। এরপর পরিবহন। এসব কাজ নিয়েই ব্যস্ততা বেড়েছে জেলে পাড়ায়। বড় বড় ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ায় অনেকটা হাসি মুখেই ঘাটে ফিরছেন তারা।

জেলেরা জানালেন, ২০ বছর পর আবার সাগরে দেখা দিয়েছে ইলিশের চমক। এখন সাগরে জালে বড় বড় ইলিশ ধরা পড়ছে, যা তাদের বিগত দিনের সংকট দূর করবে। উপকূলের বেশিরভাগ ঘাটে এখন কোটি টাকার মাছের কেনা বেচা হচ্ছে।

স্লুইস ঘাট এলাকার শহিদ মাঝি বলেন, সাগরে ২০ জেলে নিয়ে এক লাখ ৪০ হাজার টাকার ইলিশ নিয়ে ফিরছি। যেসব মাছ পেয়েছি, তার বেশিরভাগই দুই-তিন কেজি ওজনের।

জেলে আব্দুল মতিন জানান, আমরা ১৫-২০ বছর আগে এমন বড় ইলিশ পেতাম। এতো বড় ইলিশ মাঝে মধ্যে ধরা পড়ত। কিন্তু এ মৌসুমেই বড় বা রাজা ইলিশের এমন চিত্র দেখা গেছে।

জেলে আবদুর রব ও কালাম বলেন, যে হারে মাছ উঠছে তাতে, তেলের দাম বাড়ার পরও আমরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছি।

স্লুইস ঘাটের আড়তদার মো. বাবুল জানান, এবার মাছের সরবরাহ অনেক বেশি। প্রতিদিন এ ঘাট থেকে ৫০-৬০ লাখ টাকার মাছ কেনা-বেচা হচ্ছে। কখনো আবার কোটি টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে। আগের তুলনায় সরবরাহ অনেক ভালো। এতে আড়তদাররাও খুশি, জেলেরাও খুশি।

স্লুইস ঘাটের মতোই জমজমাট চিত্রের দেখা গেছে সামরাজ ঘাট, লালমোহনের বাত্তির খাল, দৌলতখানের চৌকিঘাটা, তজুমদ্দিনের চৌমুহনি-স্লুইস ঘাটসহ বড় বড় মৎস্য ঘাটে।

ভোলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন বলেন, সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আশা করি, সেপ্টম্বর মাসের শেষ দিকে সাগরের মতো মেঘনা নদীতেও ইলিশ ধরা পড়বে।

এদিকে এ বছর জেলায় ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৯১ হাজার মেট্রিক টন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।