মৃদু শব্দে বাজছে সানাই। সোনালি কাপড় ঝোলানো সিঁড়ির পাশে।
ছবির ফ্রেমে বাঁধা আছে ডালায় সাজানো বরের মুকুট, আলপনার ওপর নাগরা জোড়া। চোখ এড়ানো খুনসুঁটি আর মন-মাতানো আলোকচ্ছটা। বিয়ের অনুষ্ঠানের এমন অনেক দৃশ্যই সাধারণত ধরা থাকে না ছবির ফ্রেমে। আর মজার ব্যাপার হলো, কোনও ছবিই আয়োজন করে তোলা নয়, বরং বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে এই দৃশ্যগুলো নিজের পছন্দমতো নির্বাচন করে নিয়েছেন আলোকচিত্রী।
এই বিশেষ ও ভিন্নধর্মী ছবির প্রদর্শনী শুরু হলো ২৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে, ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে। শিরোনাম ‘ওয়েডিং ডায়রি’। আলোকচিত্রী প্রীত রেজা।
প্রীত বিয়েবাড়ির আয়োজনগুলো দেখেছেন আলোক-সাংবাদিকের দৃষ্টিতে। ছবিতে উঠে এসেছে উৎসবের নানান মজার মজার ঘটনা। তাই গ্যালারিতে প্রদর্শিত ছবিগুলো গতানুগতিক বিয়ের ছবি থেকে আলাদা।
আজকাল আমাদের দেশে বিয়ের অনুষ্ঠানকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ঘটা করে আয়োজন করে চলেছে ‘বিয়ে উৎসব’। উৎসবে রাখা হয় বাহারি সরঞ্জাম। আর এসবে আলোকচিত্রী প্রীত রেজার এই ছবি প্রদর্শনী নিঃসন্দেহে যোগ করল এক নতুন মাত্রা।
প্রীত এ ধরনের ছবিগুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করছেন ‘ওয়েডিং ফটোজার্নালিজম’ পরিভাষা। ১৯৯০ সালের দিকে উত্তর আমেরিকার কিছু সাহসী আলোকচিত্রী বিয়ের ছবি তোলার ক্ষেত্রে এনেছিলেন ভিন্নতা। তারাই বিষয়টিকে অভিহিত করেছিলেন ‘ওয়েডিং ফটোজার্নালিজম’ হিসেবে। প্রথমে বেশ হইচই পড়েছিল। কিন্তু ছবির বৈচিত্র্য দর্শকদের আন্দোলিতও করেছিল।
দর্শকরা বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবির ভিন্নতাকে উপভোগ করবেন এমন আশা নিয়েই প্রীত আয়োজন করেছেন এই প্রদর্শনী। বাংলানিউজকে তিনি জানান, ‘আমাদের দেশে আজ যখন ‘ওয়েডিং ফটোজার্নালিজম’ পরিভাষাটি ব্যবহার করা হলো তখন অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছেন। তবে আমার বিশ্বাস, একদিন এ দেশেও এই বিষয়টি প্রতিষ্ঠা পাবে। ’
বিয়ের ছবির এ বিশেষ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ। প্রদর্শনী খোলা থাকবে প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৮টা। চলবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৮২৫, অক্টোবর ২৮, ২০১০