ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

হাতের চামড়ার নিচে জন্মানো কান!

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
হাতের চামড়ার নিচে জন্মানো কান! বাম কানটা দেখতে ডান কানের মতো হলেও অন্যদের চেয়ে আলাদা

ঢাকা: মার্কিন সেনাসদস্য শামিকা ব্যারেজের বাম কানটা অন্য সবার থেকে আলাদা। যদিও বাম কানটা দেখতে ডান কানের মতোই এবং সেটা তার নিজের কোষ দিয়েই গঠিত। তাছাড়া কানটি দিয়ে ব্যারেজ ভালোভাবেই শুনতে পান। কানের মধ্যে অনুভূতিও কাজ করে ঠিকঠাক। কিন্তু কিছুদিন আগে তার মাথার সঙ্গে যুক্ত ছিল না এই কান, সেটা ছিল তার হাতে।

২০১৬ সালে টেক্সাসে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যারেজ তার কান হারিয়েছিলেন। কান ফিরে পাওয়ার জন্য তাকে যেতে হয়েছে ‘প্রিলামিনেটেড ফোরআর্ম ফ্রি ফ্ল্যাপ’ সার্জারি নামক এক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে।

এটি একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে মানুষের হাতের চামড়ার অভ্যন্তরে তার নিজের তরুণাস্থি স্থাপন করে নতুন টিস্যু উৎপাদন করা হয়।  

এ পর্যন্ত বিশ্বের অনেক মানুষই সফলভাবে এ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে গিয়েছেন, তবে ব্যারেজই হচ্ছে প্রথম মার্কিন সৈন্য যিনি এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনঃস্থাপন করতে পেরেছেন নিজের কান।

ব্যারেজের কান পুনঃস্থাপন প্রসঙ্গে টেক্সাসের উইলিয়াম বেমন্ট আর্মি মেডিক্যাল সেন্টারের প্রধান সার্জন লে. কর্নেল ওয়েন জনসন বিবৃতিতে বলেন, অপারেশনের পর কানটি বেশ ভালোভাবে কাজ করছে এবং এটা অনুভূতিতে সাড়া দিচ্ছে। এ ধরনের পুনঃস্থাপন পদ্ধতির মাধ্যমে সেনবাহিনীর তরুণ সদস্যরা অনেক উপকৃত হবেন।

এ পদ্ধতিতে অঙ্গ পুনঃস্থাপনের জন্য প্রথমে রোগীর তরুণাস্থি দিয়ে কানের আকৃতির মোল্ড তৈরি করেন চিকিৎসকরা। এ তরুণাস্থি সাধারাণত রোগীর পাজর থেকে সংগ্রহ করা হয়। তরুণাস্থিটিকে সঠিক আকৃতি দেওয়ার জন্য অনেক সময় থ্রিডি-প্রিন্টেড মোল্ড ব্যবহার করা হয়। এরপর সেটা স্থাপন করা হয় রোগীর হাতের চামড়ার নিচে।  

রোগীর হাতে অবস্থিত টিস্যুগুলো ও তরুণাস্থি একই কোষ দিয়ে গঠিত। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তরুণাস্থির চারপাশ দিয়ে চামড়া গঠিত হওয়া শুরু করে। পাশাপাশি সেখানে নতুন শিরা-উপশিরা জন্মায়। এভাবে কয়েকমাস পর চামড়ার নিচে স্থাপিত কানটি পুনঃস্থাপন প্রক্রিয়ার জন্য পরিণত হয়।

এরপর প্রায় ৭ ঘণ্টার একটি অপারেশনের মাধ্যমে হাতের চামড়ার নিচ থেকে কানটি রোগীর যথাস্থানে স্থাপিত হয়।  

ব্যারেজ একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং আমি এতে সফল হয়েছি।  

এই প্রক্রিয়ায় কান পুনঃস্থাপন আগেও হয়েছে। চীনা প্লাস্টিক সার্জন ড. গুয়ো শুজং জানান, তার টিম প্রতিবছর ৫০০ শিশুর মধ্যে এই প্রক্রিয়ায় কান পুনঃস্থাপন করে।

এদিকে ১৯৯৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচ্যুসেটসের একদল গবেষক একটি ইঁদুরের দেহে তরুণাস্থি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করলে ওই ইঁদুরের দেহে বিশাল এক কান জন্মায়। এ নিয়ে গবেষক দলটির প্রধান চার্লস ভ্যাকান্টি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ভুবনে বড়রকমের বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৪ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।