রত্নটি বিশ্বের দুর্লভ গোলাপি মুক্তার ‘বংশধর’। দেখতে ছোট মার্বেলের মতো, কিন্তু সৌন্দর্যের দিক থেকে বেশ ভারী মুক্তাটি।
ল্যুভর জাদুঘরের টুইটার পেজে গত রোববার (২০ অক্টোবর) রত্নটির ছবি পোস্ট করা হয়। এরপর থেকেই প্রবীণার রূপ-গুণে মুগ্ধ না হয়ে পারেনি কেউ। হঠাৎ দেখায় মনে হবে, রংধনুর সাত রং শুষে নিজের বর্ণচ্ছটা বহুগুণ বাড়িয়ে নিয়ে গোলাপি প্রদ্বীপ হয়ে জ্বলছে সে।
আবু ধাবির ল্যুভর জাদুঘরে প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত করা হবে রত্নটিকে। আরব আমিরাতের সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষদিকে মুক্তাটি জনসম্মুখে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মুক্তাটির নামকরণ করা হয়েছে ‘টেন থাউজেন্ড ইয়ারস অব লাক্সারি’, যা বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘১০ হাজার বছরের বিলাসিতা’।
২০১৭ সালে দেশটির মারওয়া উপদ্বীপে সন্ধান পাওয়া যায় রত্নটির। পরে, রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে বের করা হয় মূল্যবান মুক্তার বয়সকাল। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮০০-৫৬০০ পূর্বাব্দে সৃষ্টি হয়েছে মুক্তাটি। এখন পর্যন্ত পাওয়া অন্য কোনো মুক্তার বয়সই এর ধারেকাছেও নেই।
দামি রত্নের জন্য বিখ্যাত আরব আমিরাত। দেশটির বিভিন্ন উপকূলীয় দ্বীপে মুক্তার চাষ হয়। তবে, মারওয়া উপকূলে এখনো প্রকৃত মুক্তাই (ঝিনুকের ভেতর জন্মানো) পাওয়া যায় বেশি। গ্রীষ্মকালে ঝিনুক রোদে শুকিয়ে তারপর পচানো হয়। একসময় নিজে থেকেই খুলে যায় সেগুলো। এর ভেতরেই পাওয়া যায় অসংখ্য মুক্তা। তবে, এদের মধ্যে বেশ দুর্লভ গোলাপি মুক্তাগুলো।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, মারওয়ায় আল-কাবি নামে একটি আদিবাসী জাতির বসবাস ছিল। তাদের প্রধান আয়ের উৎসই ছিল মুক্তা ব্যবসা। সেসময়কার কোনো ঝিনুকের ভেতর হয়তো গুপ্তাবস্থাতেই থেকে গিয়েছিল মুক্তাটি। একারণে আল-কাবিরা আর খুঁজে পায়নি সেটা। প্রায় আট হাজার বছর লুকিয়ে থাকার পরে সমুদ্রের ঢেউয়ে উপকূলে এসে নিজেকে উন্মুক্ত করে এ মুক্তা সম্রাজ্ঞী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৯
কেএসডি/একে