প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই সেখানে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।
তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এ গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯ মাঘ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনা
১৮১৪: কলকাতায় ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮১৭: শিক্ষা ও খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে চার্চ মিশনারি সোসাইটির প্রথম শাখা কলকাতায় স্থাপিত হয়।
১৮৫৩: শম্ভুনাথ পণ্ডিত প্রথম বাঙালি হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টে সরকারি উকিল নিযুক্ত হন।
১৮৬২: শম্ভুনাথ পণ্ডিত প্রথম বাঙালি হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন।
১৮৮৮: খান বাহাদুর হাশেম আলি খান, বাঙালি রাজনীতিবিদ।
১৯০১: রাণী ভিক্টোরিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।
১৯২২: জেমস জয়েসের উপন্যাস ইউলিসিস প্রকাশিত হয়।
১৯৩৫: যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রথম স্বাক্ষী ও প্রমাণ হিসেবে ফটোগ্রাফকে অনুমোদন করা হয়।
১৯৪৩: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: স্টালিনগ্রাদের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। সোভিয়েতের কাছে জার্মান সেনারা আত্মসমর্পণ করে।
১৯৫৯: শিশিরকুমার ভাদুড়ী ভারত সরকার প্রদত্ত ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন।
১৯৮৯: সত্যজিৎ রায়কে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান ‘লিজিয়ন ডি অনার’ প্রদান।
২০০৪: ২৩৭ সপ্তাহ ধরে টেনিসে এক নম্বর র্যাংকিং ধরে রাখার রেকর্ড অর্জন করেন সুইস টেনিস তারকা রজার ফেদারার।
জন্ম
১৮৮২: জেমস জয়েস, আইরিশ ঔপন্যাসিক, ছোটগল্প লেখক ও কবি
১৮৮৬: উইলিয়াম রোজ বেনেট, মার্কিন কবি ও লেখক
১৯১৫: আবা ইবান, দক্ষিণ আফ্রিকান-ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ ও কূটনৈতিক, জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রথম রাষ্ট্রদূত
১৯১৫: খুশবন্ত সিং, ভারতীয় সাংবাদিক ও লেখক
১৯৩১: পূর্ণেন্দু পত্রী বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক, সাহিত্য গবেষক, কলকাতা গবেষক, চিত্র-পরিচালক ও প্রচ্ছদশিল্পী।
১৯৩৬: সুমিতা দেবী, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী
১৯৩৯: ডেল টমাস মর্টেনসেন, মার্কিন অর্থনীতিবিদ ও অধিবিদ্যাবিৎ, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী
১৯৩৯: হাসান আজিজুল হক, বাংলাদেশি গল্পকার ও কথাসাহিত্যিক
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক হিসেবে পরিগণিত। ষাটের দশকে আবির্ভূত এ কথাসাহিত্যিক তার সুঠাম গদ্য এবং মর্মস্পর্শী বর্ণনাভঙ্গির জন্য প্রসিদ্ধ। জীবনসংগ্রামী মানুষের কথকতা তার গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ। রাঢ়বঙ্গ তার অনেক গল্পের পটভূমি। আগুনপাখি (২০০৬) হক রচিত শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। ১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ও ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। এ অসামান্য গদ্যশিল্পী তার সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধি লাভ করেন।
২০১২ সালে তিনি আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং ২০১৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি পান অনন্য এ কথা সাহিত্যিক।
১৯৪৪: বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী মো. আলী সিদ্দীকী
১৯৫২: রালফ মার্কেল, মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও অধিবিদ্যাবিৎ
১৯৫৩: হামিদুর রহমান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত।
১৯৬৮: আমিনুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশী ক্রিকেট খেলোয়াড়
১৯৭৭: শাকিরা, কলম্বিয়ান গায়িকা, গীতিকার, প্রযোজক ও অভিনেত্রী
১৯৮৭: জেরার্ড পিকে, স্পেনীয় ফুটবলার
১৯৮৭: ইমরুল কায়েস, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার
মৃত্যু
১৮০৪: জর্জ ওয়ালটন, আমেরিকান আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ, জর্জিয়ার গভর্নর (জন্ম ১৭৪৯)
১৯০৭: দিমিত্রি মেন্ডেলিভ, রুশ রসায়নবিদ
১৯৩৬: বিপিনবিহারী গুপ্ত, বাঙালি সাহিত্যিক ও সমালোচক
১৯৬৪: সৈয়দ আবদুস সামাদ, বাঙালি ফুটবলার
১৯৭০: বারট্রান্ড রাসেল, ইংরেজ গণিতজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, লেখক এবং নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক।
১৯৮৮: বাঙালি চিত্রশিল্পী বাংলাদেশের পটুয়া কামরুল হাসান
তিনি ১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর কলকাতায় তিনজিলা গোরস্তান রোডে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পৈতৃক নিবাস পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার নারেঙ্গ গ্রামে।
কামরুল হাসান চিত্রাঙ্কনে দক্ষতা অর্জন করে বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছিলেন। তাকে সবাই শিল্পী বললেও তিনি নিজে ‘পটুয়া’ নামে পরিচিত হতে পছন্দ করতেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জেনারেল ইয়াহিয়ার মুখের ছবি দিয়ে তার আঁকা ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ পোস্টারটি খুব বিখ্যাত।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও রেডিও-এর কলা বিভাগের পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭২ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইন করা জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপ দেন।
দেশে-বিদেশে তিনি বহু একক এবং যৌথ চিত্র প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। শিল্পচর্চায় অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননাও পেয়েছেন।
১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কামরুল হাসান জাতীয় কবিতা উৎসবে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকাকালীন ‘দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে’ স্কেচটি সমাপ্ত করার কয়েক মিনিট পর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন গোরস্থানে সমাহিত করা হয়।
২০০৬: মিজানুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২১
এফএম