ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

মনের কলুষতা দূর করে শরতের দিনগুলো

টিপু সুলতান, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
মনের কলুষতা দূর করে শরতের দিনগুলো ছবি: টিপু সুলতান

পাবনা (ঈশ্বরদী): বাংলার প্রকৃতিতে গোটা শরৎকালই যেন সুখ, আনন্দ আর ঐশ্বর্যের প্রতীক। শরতের দিনগুলো যেন মানুষের মনের কলুষতা দূর করে দেয়।

মনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় শরৎকালের হালকা মেঘের মতোই।

শরতের শুভ্র নীল আকাশে সাদা মেঘের ছুটোছুটি যেন অন্যরকম অনুভূতি। শরতের অনাবিল বহু মুগ্ধতা ছড়িয়ে আছে বাংলা সাহিত্যের নানা স্থানে। কালিদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে জীবনানন্দ দাস, শামসুর রহমানসহ অনেকে শরৎকাল নিয়ে লিখেছেন প্রবন্ধ, ছড়া। পাবনার সন্তান গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের বিখ্যাত অনেক কালজয়ী গান রয়েছে।  

বাঙালির সামনে শরতের সৌন্দর্য উপস্থাপন করে গেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ তার মতে শরতে মুগ্ধ বাংলার কবিকুল। তিনি লিখে গেছেন, ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি’৷

উপমহাদেশের কালজয়ী গীতিকার ও সুরকার, পাবনার কৃতি সন্তান গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার তার লেখা গানে বলেছেন-

'বিশ্ব কবির ‘সোনার বাংলা’,
নজরুলের ‘বাংলাদেশ’,
জীবনানন্দের ‘রূপসী বাংলা’
রূপের যে তার নেই কো শেষ, বাংলাদেশ। '

ঋতুর রানী শরতের আবির্ভাব স্নিগ্ধতার আবহ নিয়ে আসে। কালের বিবর্তনে ইট পাথুরে শহরে কর্মব্যস্ততায় মানুষের শরৎ দেখার সুযোগ হয়ে ওঠে না।

এখন তেমন কাঁশফুল চোখে পড়ে না। শরৎকাল মানেই নদীর তীরে ঝিরিঝিরি বাতাসে দোল খাওয়া ধবধবে সাদা কাশফুল। কয়েকমাস গ্রাম ডুবে থাকা সবুজ সমারোহের আমন ধানের গাছগুলো, পানিতে তরতর করেই বাড়তে শুরু করে। গ্রাম এলাকায় বর্ষায় পর কয়েকমাস গৃহস্থরা ছাগল মহিষ নিয়ে বেশ দুর্ভোগেই থাকেন। এ সময় খাল-বিল, ডোবা-নালায় শাপলার সমারোহ দেখা যায়।


শৈশবের দূরন্তপনা আর শিশুদের উচ্ছলতা, বিল থেকে শাপলা তুলে মেয়ে শিশুরা মালা গেঁথে গলায়-হাতে গহনা-চুড়ি বানিয়ে পরা, শালুক খাওয়া, মায়ের কাছে বকুনি খাওয়ায় ভয়ে শাপলা ফুলের ডগা নিয়ে বাড়িতে ফেরা, বিষয়গুলো খুবই আনন্দের।  আর দেশি মাছ দিয়ে শাপলার ডগার তরকারির মজাটাই যেন আলাদা।

স্বচ্ছ, নির্মল এক ঋতুর নাম শরৎ। শরৎ হচ্ছে চমৎকার মেঘের ঋতু, স্পষ্টতার ঋতু, শুভ্রতার প্রতীক।  শরতের রঙ দিয়ে যদি জীবন সাজানো যায় তাহলে আমাদের জীবন হয়ে উঠবে এমন শুভ্র-স্নিগ্ধতায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।