ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

বসন্তে হারায় গুচ্ছসুন্দরী ‘গোল্ডেনশাওয়ার’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২২
বসন্তে হারায় গুচ্ছসুন্দরী ‘গোল্ডেনশাওয়ার’ চোখজুড়ানো নান্দনিক ফুল গোল্ডেনশাওয়ার। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: ঋতুরাজ বসন্ত অধিকাংশ ফুলেদের আশ্রয়দাতা। প্রকৃতি এই ঋতুর হাত ধরেই নতুনরূপে সুসজ্জিত হয়ে উঠে।

গাছে গাছে পাতায় পাতায় বসন্ত যেন আবহমান বাংলার প্রাণসঞ্চারকারী। এসব বিবেচনায় এই ঋতুকেই শ্রেষ্ঠ বলা হয়।

তবে বেদনার কথা হলো, প্রকৃতি আরো এক লতাময় সৌন্দর্যরূপ ফুল ‘গোল্ডেনশাওয়ার’ এই ঋতুরাজের আগমনের পরপরই হারিয়ে যায়। এ যেনো বসন্তকে আমাদের গৃহপ্রকৃতিতে ডেকে এনে সব ফুলেদের সঙ্গে পরিচয় করি দিয়েই সে ধীরে ধীরে নীরব অভিমানটুকু নিয়ে দূরে সরে যায়। মুছে যায় প্রকৃতির চিহ্ন থেকে।

বলাই যায়, এ তার অনাকাঙ্খিত গমন। কেননা প্রকৃতি তার এতো সুন্দর ফুলগুচ্ছ উপহারকে হারাতে চায় না কিছুতেই। তাকে ধরে রাখতে চায়, বেঁধে রাখতে চায় আষ্টেপৃষ্টে। নিজের ভেবে, আপন বিশ্বাসে।

কিন্তু এই মর্তচরাচরে অর্থাৎ পৃথিবীর পরতে পরতে কোনো কিছুই যে অমর নয়। চিরদিনের নয়। চিরস্থায়ী নয়। সমস্ত কিছুকেই সুনির্দিষ্ট সময়ের পর পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিতেই হয়। এই গুচ্ছসুন্দরী গোল্ডেন শাওয়ারের হারিয়ে যাওয়া চিরবিচ্ছেদের নীরব উদাহরণ।

প্রিয় গোল্ডেন শাওয়ারের সঙ্গে আবার দেখা হবে এক বছর পর। এই ভাবনাতেই হৃদয়ে তাই জাগে বেদনার ঢেউ। প্রকৃতিতে ফুটেই সে নিজগুণে প্রকৃতিপ্রেমী, বৃক্ষপ্রেমী, পুষ্পপ্রেমী সবার হৃদয় অনায়াসে জয় করে নেয়। এ এক দুর্দান্ত সৌন্দর্যক্ষমতা রয়েছে তার অঙ্গশোভায়। সবাই তার আপনসৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকে বারবার।

ফুল ফোটার মৌসুম শীত-বসন্ত হলেও শীতের মাঝামাঝি থেকে ফুল ফোটা শুরু হয়। বসন্তের শুরুকে স্বাগত জানিয়ে সে বিদায় নেয়। এই ফুলের অপ্রচলিত বাংলানাম সোনাঝুরিলতা। কিন্তু এই কমলাসুন্দরী গোল্ডেনশাওয়ার নামেই অধিক পরিচিত। এই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Pyrostegia venusta.

এই ফুলগাছটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। কোনো মাঝারি বা বড় গাছের গোড়ায় লাগিয়ে দিলে সেই গাছে ভর করে গোল্ডেনশাওয়ার উপরে উঠে তার অস্তিত্ব বিস্তার করে থাকে। প্রায় আশি মিটার পর্যন্ত গাছটি লম্বা হতে পারে। জাম গাছের উপর শোভা পাচ্ছে এই ফুলগুলো।

ফুল ফোটার সময় হলেই ধীরে ধীরে সারাগাছজুড়ে সে আপন সৌন্দর্য প্রকাশ করে। অনেক দূর থেকে আমাদের নজরকাড়ে সে। ঝুলন্ত মঞ্জরির এই গুচ্ছফুলগুলো নলাকার। একেকটি ফুলের দৈর্ঘ্য প্রায় চার থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার। তবে ফুলগুলো গন্ধহীন। কোনো প্রকার সুগন্ধি নেই তাতে। কেবল চোখজুড়ায়, হৃদয়ভরায়।    

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, ৬ মার্চ, ২০২২
বিবিবি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad