শক্তির বিচারে পিএসজির ধারেকাছেও থাকার কথা নয় আল-নাসরের। কিন্তু সৌদি প্রো লিগের ক্লাবটিতে যে আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
প্রাক-মৌসুমী প্রস্তুতিমূলক প্রীতি ম্যাচে আজ জাপানের নাগাই স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। এই ম্যাচ দিয়েই পিএসজির জাপান সফরের শুরু হলো। তবে শুরুটা ভালো হলো না প্যারিসিয়ানদের। তুলনামূলক দুর্বল আল-নাসরের সঙ্গে নিষ্ফলা ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়লো ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।
ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা নেইমার জুনিয়র রইলেন বেঞ্চেই। দলের আরেক মহাতারকা এমবাপ্পেও 'অজানা' কারণে স্কোয়াডের বাইরে। তবে দলবদল নিয়ে ঝামেলার কারণেই তাকে মূল দলের বাইরে রাখা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। কারণ তাকে পেতে এরইমধ্যে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি ক্লাব আল-হিলাল। কিন্তু ফরাসি ফরোয়ার্ড চান রিয়াল মাদ্রিদের যেতে। এর মধ্যেই আজ তাকে ছাড়াই মাঠে নামে পিএসজি।
নেইমার ও এমবাপ্পের জায়গায় আজ পিএসজির জার্সিতে মাঠে নামের কার্লোস সোলের ও নোয়া লেমিনা। আর রিয়াল ছেড়ে এই গ্রীষ্মে যোগ দেওয়া মার্কো আসেনসিও খেলেছেন মূল স্ট্রাইকার হিসেবে। এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আবার রিয়ালে রোনালদোর সাবেক সতীর্থ। তবে পিএসজির নতুন এই আক্রমণভাগ তেমন কাজে আসেনি। বরং শুরুর দিকে রোনালদোর নেতৃত্বে আল-নাসর দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করে।
প্রথমদিকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল পিএসজি। দারুণ এক ফ্রি-কিক নিয়েছিলেন সোলের। কিন্তু তার শট ঠেকিয়ে দেন আল-নাসরের গোলরক্ষক। মিনিট দুয়েক পর ১৮ বছর বয়সী লেমিনার বাঁকানো শটে বল জমা হয় গোলরক্ষকের গ্লাভসে। এরপর আসরে নামেন রোনালদো। টানা কয়েকটি আক্রমণে নেতৃত্ব দেন তিনি। এমনকি বক্সের বাইরে থেকে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের নেওয়া ফ্রি-কিক আটকে দিয়ে রক্ষণেও ভূমিকা রাখেন তিনি।
বল দখল ও আক্রমণে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও দুই দলের মধ্যে পার্থক্য হয়ে থাকেন রোনালদো। তাঁর একটি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, আরেক শট আটকে দেন পিএসজি গোলরক্ষক দানিলো পেরেরা। বিরতির কিছুক্ষণ আগে গোল করার একদম কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন রোনালদো। তবে তাঁর দুর্দান্ত ফ্লিক দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। প্রথমার্ধের একদম শেষ মুহূর্তে দুর্দান্ত বাইসাইকেল কিক নিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু বল অনেক বেশি উঁচুতে থাকায় লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি তিনি।
সবমিলিয়ে প্রথমার্ধে পিএসজিকে দারুণ চাপে রাখে আল-নাসর। দ্বিতীয়ার্ধেও সেই চাপ অব্যাহত রাখে সৌদি ক্লাবটি। ৪৮তম মিনিটে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু আরেক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করে দেন। ৬৬তম মিনিটে রোনালদোকে তুলে নেন আল-নাসর কোচ লুইস কাস্ত্রো। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে গোলের মুখ দেখলেন না রোনালদো।
রোনালদো উঠে যেতেই স্টেডিয়ামে নীরবতা নেমে আসে যেন। ম্যাচের উত্তেজনাও তাতে কমে আসে। তবে বিপরীতে পিএসজির আক্রমণের ধার ফিরে আসে যেন। ৭০তম মিনিটে ঘারবির ডান পায়ের শট ঠেকান আল-নাসর গোলরক্ষক। ম্যাচের এই অবস্থায় বেঞ্চে থাকা নেইমারকে নামানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে আর নামানো হয়নি। বাকি সময় দুই দল বলার মতো তেমন আক্রমণ করতে পারেনি।
ম্যাচে আধিপত্য দেখালেও শেষ পর্যন্ত হতাশার ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে পিএসজি। অন্যদিকে আল-নাসরের জন্য এই ড্র প্রায়ের সমান। টানা দুই হারে বিপর্যস্ত দলটি এই ড্রয়ে নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
এমএইচএম