সদ্য শেষ হওয়া প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমে রহমতগঞ্জের জার্সিতে ছিলেন দুর্দান্ত। ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কারও পেয়েছেন হাতেনাতে।
আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চীনের হ্যাংজুতে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এশিয়ান গেমস বা এশিয়াড। সেখানে অন্য ইভেন্টগুলোর মতো ফুটবলেও থাকছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব। তবে গত ২০১৮ ইন্দোনেশিয়া এশিয়ান গেমসে শুধু পুরুষ ফুটবল দল অংশ নিলেও এবার থাকছে নারী ফুটবলাররাও। এশিয়াডে পুরুষ-নারী দুই ফুটবল দলই কঠিন গ্রুপে পড়েছে। হ্যাংজুতে বাংলাদেশের ছেলেদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক চীন, মিয়ানমার এবং ভারত। তবে প্রতিপক্ষ নিয়ে মোটেও ভাবছেন না তানভীর। এশিয়ার সেরা মঞ্চে নিজেদের সেরা দিতে বুক চিতিয়ে লড়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এ তরুণ-মেধাবী ফুটবলার।
প্রথমবার এত বড় আসরে সুযোগ পেয়েছেন। এ নিয়ে তানভীর বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এশিয়ান গেমসে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রীড়া ইভেন্টগুলোর একটি। এমন একটি আসরে আমি অংশ নিতে পেরে গর্বিত। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা, দেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ইভেন্টে খেলার চেয়ে বড় সম্মান আর নেই। আমি আমার পারফরম্যান্স দিয়ে দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনার চেষ্টা করব এবং এটা আমি সর্বদাই করে থাকি। ’
গত এশিয়ান গেমসে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। হারিয়েছিলেন কাতারের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে। এবার কেমন হতে পারে বাংলাদেশের এশিয়াড জার্নি? প্রতিপক্ষই বা কেমন হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তানভীর বলেন, ‘আমরা কঠিন গ্রুপে পড়েছি। চীন, মিয়ানমার, ভারতের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। তবে এসব নিয়ে আমরা মোটেও উদ্বিগ্ন নই। প্রতিপক্ষ কঠিন হলেও তাদের হারানোর ক্ষমতা আমাদের আছে। আমি অন্তত আত্মবিশ্বাসী যে গত আসরের মতো এবারও আমরা ভালো খেলব। ’
বয়সে তরুণ হলেও তানভীরের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা কিন্তু কম নয়। বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের জার্সিতে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ কিংবা এএফসি কাপের বাছাইপর্ব; এর বাইরে অনূর্ধ্ব-২০ সাফ, এএফসি কাপেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে এ ডিফেন্ডারের। ঘরোয়া লিগ-টুর্নামেন্টেও দারুণ সফল এক ফুটবলার তিনি। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব সাইফ স্পোর্টিংয়েই দীর্ঘ পাঁচ মৌসুম খেলেছেন। পরে ২০২২-২৩ মৌসুমে নাম লেখান পুরনো ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জে। ক্যারিয়ারে দুই ক্লাবেই নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে সামনে আরো বড় ক্লাবে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি।
ব্যবসায়ী বাবা আর গৃহিণী মায়ের ৪ পুত্রের একজন তানভীর। বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী তানভীরের শৈশব থেকে ফুটবলই ধ্যানজ্ঞান। বাবার অনুপ্রেরণা আর উৎসাহেই মূলত ফুটবলে আসা। একদিন বড়মাপের ফুটবলার হবেন- শৈশবের সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপদানের পথে। ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে উত্তরবঙ্গের সেই দিনাজপুর থেকে সাভারের বিকেএসপিতে এসে ভর্তি হন তানভীর। তবে সফরটা সহজ ছিল না। বিকেএসপিতে ভর্তি পরীক্ষায় দু’বার অকৃতকার্য হয়েও তৃতীয়বারের চেষ্টাতে স্বপ্নের ফুটবলে ভর্তি হতে সক্ষম হন তিনি।
তানভীর তার স্বপ্নগুলোকে ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। প্রথমে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখা ছেলেটি পরে বড়মাপের ফুটবলার হতে চেয়েছেন। সেই স্বপ্ন এখন আরো ডালপালা মেলে অনেকদূর বিস্তৃত হয়েছে। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখছেন তানভীর। তবে সেই পথও খুব দূরে নয়। অনূর্ধ্ব-২৩ দলে ইতোমধ্যে চলে এসেছেন। জাতীয় দল থেকে মাত্র নিঃশ্বাস দূরত্বে তার অবস্থান। খুব শিগগিরই নিজেকে জাতীয় দলে দেখার প্রত্যয় তানভীরের কণ্ঠে।
এশিয়ান গেমস সামনে রেখে আগস্টের ৫ তারিখ থেকে শুরু হবে জাতীয় দলের ক্যাম্প।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৩
এআর/এমএইচএম