যাত্রা শুরুর পর থেকেই দেশের ফুটবলের আকর্ষণ কেড়ে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংসের নিজম্ব ভেন্যু কিংস অ্যারেনা। বাংলাদেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে নিজস্ব হোম ভেন্যুতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলে কিংস ইতিহাস গড়েছে আগেই।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একপ্রান্তে গড়ে ওঠা দেশের প্রথম ব্যক্তি মালিকানাধীন বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রাণ কিংস অ্যারেনা আজ ঢুকে পড়ছে আন্তর্জাতিক ভেন্যুর তালিকায়। তাই বলাই যায়, আধুনিক এই অ্যারেনা এখন থেকে যতটা কিংসের, ঠিক ততটাই গোটা দেশের।
কিংস অ্যারেনায় আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিয়ে উচ্ছ্বসিত দেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসে জামাল ভুঁইয়া তাৎক্ষণিক মনে করতে পারলেন না শেষ কবে তারা ঢাকায় ম্যাচ খেলেছেন। ঢাকায় ম্যাচ মানেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে সেখানে সংস্কারকাজ শুরু হওয়ায় তখন থেকে জাতীয় দলের প্রতিটি হোম ম্যাচের জন্য বিকল্প ভেন্যু ভাবতে হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ৩৪টি ম্যাচ খেলেছে, যার তিনটি সিলেটে।
অবশেষে জামালদের ঢাকায় ফেরা। তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের বদলে আজ নতুন ভেন্যু বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় নামতে যাচ্ছেন তারা। এখানে খেলা নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত জামাল বলেন, ‘ঢাকা আমাদের রাজধানী। এখানে সবসময় দর্শক বেশি থাকে। কিংস অ্যারেনায় সবসময়ই দর্শক থাকে। এখানে দর্শকরা যত কাছে থেকে খেলা উপভোগ করতে পারে আর কোনও স্টেডিয়ামে তেমনটা পারেন না। ফলে তারা কাছাকাছি থাকায় অন্যরকম এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ’
বাংলাদেশ-আফগান ম্যাচ দিয়েই ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে যাবে কিংস স্টেডিয়ামের নামটি। সবকিছু মিলিয়ে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে বসুন্ধরা কিংস সভাপতি এবং বাফুফে সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানের। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের ভেন্যুতে প্রথমবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ হচ্ছে, স্বভাবতই আমরা আনন্দিত। শুরুর সময়কাল থেকে এখনো পর্যন্ত এর পেছনে যারা জড়িত ছিল, আমি সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আশা করছি সামনের দুটি ম্যাচ আমরা ভালো পারফরম্যান্স করতে পারব। ’ নিজের ক্লাবের আগে জাতীয় দলের ম্যাচ হওয়ায় গর্বিত ইমরুল হাসান, ‘এটা স্বাভাবিক। আসলে জাতীয় দল, ক্লাব দলের চেয়েও ঊর্ধ্বে। সুতরাং বাংলাদেশ দলের খেলার মাধ্যমে কিংস অ্যারেনার অভিষেক হচ্ছে এটা আমাদের জন্য বাড়তি পাওয়া। ’
২০১৯ সালে ৫৫ বিঘা জমিতে ক্রিকেট ও ফুটবল মাঠসহ বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের। তবে দিন যত গড়িয়েছে কমপ্লেক্সের আয়তন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ বিঘায়। প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠছে এই ক্রীড়া কমপ্লেক্স।
বসুন্ধরা কিংসের এই বিশাল যজ্ঞ দেখে বিস্মিত আফগানিস্তান দলের কুয়েতি কোচ আব্দুল্লাহ আল মুতাইরিও, ‘এটা অসাধারণ একটা কাজ হচ্ছে। আমার তো মনে হয় অল্প সময়ের মধ্যে এই অ্যারেনা বাংলাদেশের প্রধান ভেন্যুতে রূপ নেবে। এ রকম ক্লাব একটি দেশে কয়েকটা থাকলে খুব বেশি দিন লাগবে না ফুটবলের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে। ’
আজ কিংসের কর্মকর্তাদের জন্য স্বপ্ন পূরণের দিন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখার লক্ষ্য বাস্তব রূপ পাওয়ায় এখন তাদের সামনে আরও বড় স্বপ্নের হাতছানি। তাদের স্বপ্ন, একদিন হয়তো এই অ্যারেনাতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ আয়োজিত হবে। তখন সেই গর্বের অংশীদার কেবল বসুন্ধরা গ্রুপ কিংবা বসুন্ধরা কিংস হবে না, হবে পুরো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩
এআর/এএইচএস