ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

‘ম্যারাডোনা পেরেছেন, মেসিও পারবেন’

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৪
‘ম্যারাডোনা পেরেছেন, মেসিও পারবেন’

ঢাকা: ডিয়েগো ম্যারাডোনার মত আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দেবেন লিওনেল মেসি। ২৮ বছর পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করে নিজের নাম পাকা করবেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠদের তালিকায়।

সারা বিশ্বের শত কোটি সমর্থককে আনন্দে ভাসিয়ে ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরবেন মারাকানায়। এমনটাই প্রত্যাশা মেসিভক্ত ও আর্জেন্টিনা সমর্থকদের।
২৪ বছর পর ফাইনালে ওঠায় সমর্থকরা এবার যেন নড়েচড়ে বসেছেন। তাদের প্রত্যাশা, এতদূরে এসে তাদের হতাশ করবেনা মেসি বাহিনী।  

সমর্থকরা বলছেন, ১৯৮৬ সালে অনেকটা একাই আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন ফুটবল কিংবদন্তী ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তার মত করেই এবার আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছেন বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার লিওনেল মেসি। তাই ম্যারাডোনা যেহেতু পেরেছিলেন, মেসিও পারবেন।

অনেকের মতে মেসি ম্যারাডোনাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন। ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার হয়ে জিতেছেন সম্ভব সব কিছু। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়েও গোল সংখ্যায় ছাড়িয়ে গিয়েছেন ম্যারাডোনাকে। ৯২ ম্যাচে মেসির গোল সংখ্যা ৪২, যেখানে ম্যারাডোনা এক ম্যাচ কম খেলে করেছিলেন ৩৪ গোল। তাই বিশ্বকাপটা মেসির পাওনাই হয়ে গেছে বলে মনে করেন তারা।

‘মেসি নামক বিশ্বজয়ী রাজপুত্রের চুম্বন না পেলে বিশ্বকাপ নামের রয়্যাল প্রিন্সেসের সোনালী গালে অসীম আক্ষেপ থেকে যাবে!’

ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমনটিই লিখেছেন মাহমুদুল হাসান নামে এক মেসি ভক্ত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হলের শিক্ষার্থী।

তাছাড়া নকআউট পর্বে এসে ফর্মে ফিরেছেন দলের অন্যান্য তারকারাও। হিগুয়েইন, ডি মারিয়া গোল পাচ্ছেন, ভালো খেলছেন লাভেজ্জি, পেরেজরাও। চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন ম্যানসিটি তারকা আগুয়েরা।

মাঝ মাঠ পুরোটাই দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন হাভিয়ের মাচেরানো। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে ছন্দে রয়েছেন রোহ, গ্যাগোরা। ডিফেন্স আগলাতে রয়েছেন বিশ্বস্ত সেনানী পাবলো জাবালেতা, ডেমিকেলিস ও গ্যারাই। সুতরাং আর্জেন্টিনার শিরোপা স্বপ্নের রঙ ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে।

এবার বিশ্বকাপে মেসির ধারাবাহিক পারফরমেন্স ও সুগঠিত ‘টিম আর্জেন্টিনা’ সমর্থকদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুনে।

জিয়া হলের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনকে মুগ্ধ করেছে আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত রক্ষণভাগ। তার মতে এটাই আর্জেন্টিনার সর্বকালের সেরা ডিফেন্স। এমন ডিফেন্স এ বিশ্বকাপে আর কোন দলে দেখেননি।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনার ডিফেন্স নিয়ে সবসময় সমালোচনা থাকে। কিন্তু এবার তারা দেখিয়ে দিয়েছে তাদের ডিফেন্সই বর্তমানে বিশ্বসেরা। তাই এ ডিফেন্সকে ভেদ করে আর্জেন্টিনার জালে বল ঢোকাতে জার্মানির নাভিশ্বাস উঠবে। ’

মতের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি দেখেন গত ৬টি ম্যাচে মাত্র তিনবার বল স্পর্শ করেছে আর্জেন্টিনার জালে। যা সেমিফাইনাল খেলা প্রতিটি দলের চেয়ে কম। নকআউট পর্বে ১টি গোলও খায়নি তারা। এতেই কি প্রমাণ হয়না যে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগই বিশ্বসেরা?’

মেসি-ডি মারিয়া-হিগুইন ও আগুয়েরা সমন্বয়ে গঠিত আক্রমণ ভাগকে অপ্রতিরোধ্য বলে মনে করেন একই হলের মামুন সরদার।

তিনি বলেন,  ‘যে দলের আক্রমণ ভাগের নেতৃত্বে লিওনেল মেসি নামক এক খেলোয়াড় সে দলের আক্রমণভাগ যে বিশ্বসেরা সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।

তাছাড় মেসিকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য থাকবেন ডি মারিয়া হিগুইন ও আগুয়েরার মত সেরা স্ট্রাইকাররা। তাই জার্মানির ডিফেন্সকে বড় পরীক্ষায় ফেলে তারাই উৎরে যাবে। ’

শুধু রক্ষণ ও আক্রমণভাগই নয়, আর্জেন্টিনার গোছালো মাঝমাঠও আশা জাগাচ্ছে সমর্থকদের মনে।

জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী গালীব আশরাফ বলেন, ‘হাভিয়ের মাচেরানোর নেতৃত্বে আর্জেন্টিনার মাঝমাঠটা অন্য যেকোন বারের চেয়ে বেশি গোছালো। তাছাড়া পেরেজও অসাধারণ খেলছে। রক্ষণ ও আক্রমণভাগের সাথে সেতু বন্ধন রচনায় অসাধারণ খেলছে আর্জেন্টিনার মাঝমাঠ। ’

জার্মানিকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মানলেও হারানো অসম্ভব মনে করেন না তারা। ’৮৬ তে এই জার্মানিকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ম্যারাডোনার দল।
তাছাড়া রেকর্ড বলে জার্মানি যে ম্যাচে বেশি ব্যবধানে জেতে পরের ম্যাচেই হারে অথবা ড্র করে।

এই বিশ্বকাপেই পর্তুগালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পরের ম্যাচেই ঘানার সাথে ড্র করে। তাছাড়া দুর্বল আলজেরিয়ার সাথে জিততেও নাকানি চুবানি খেতে হয়েছে। গত বিশ্বকাপেও বড় ব্যবধানে জেতার পর সার্বিয়ার কাছে হেরেছিল জার্মানি।

তাই জার্মানিকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে মনে করছেন সমর্থকরা।

মুহসীন হলের ফরহাদ উদদীন এক কথায় বলে দিলেন, ‘আর্জেন্টিনার জয়রথে জার্মানি কোন বাধাই নয়। ’

সুর্যসেন হলের মুহাম্মদ ইব্রাহীম সুজন বলেন, ‘কোন কথা হবেনা বস, কাপ এবার আর্জেন্টিনার!’

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।