ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

সেমিতে যাওয়া হলো না বসুন্ধরা কিংসের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
সেমিতে যাওয়া হলো না বসুন্ধরা কিংসের সেমিতে যাওয়া হলো না বসুন্ধরা কিংসের-ছবি: সোহেল সরওয়ার

প্রিয় দলকে সমর্থন জানাতে জার্সি পরে চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিল বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকরা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও তাদের উল্লাস থামাতে পারেনি। কিন্তু সেই উল্লাস থেমে গেলো মুহূর্তে। শুরুতে জয়ের আশা জাগিয়েও হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসকে।

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে সেমিফাইনালে যেতে হলে জয় ছাড়া বিকল্প ছিল না বসুন্ধরার সামনে। অন্যদিকে ড্র হলেই চলতো মালেয়শিয়ার ক্লাব তেরেঙ্গানু এফসির।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সেই কঠিন সমীকরণকে সামনে রেখে ইংলিশ মিডফিল্ডার লি অ্যান্ড্রু টাকের হ্যাটট্রিকে ৪-২ ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে বসুন্ধরা কিংস। আর ৭ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারে পা রেখেছে তেরেঙ্গানু।

আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় ডাগআউটে ছিলেন না বসুন্ধরা কিংস কোচ অস্কার ব্রুজন। স্প্যানিশ কোচের পরিবর্তে দলের দায়িত্ব কাঁধে নেন সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি। তার অধীনে দুর্দান্ত খেলছিলেন কলিন্দ্রেস-জালালরা।

প্রথম মিনিট হওয়ার আগেই প্রতিপক্ষ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ছুটে যান দেনিয়েল কলিন্দ্রেস। তবে কোস্টারিকান ফরোয়ার্ডকে বাধা দেয় তেরেঙ্গানুর রক্ষণভাগ। এর পরপরই ফ্রি-কিক পায় কলিন্দ্রেসরা। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। ৪র্থ মিনিটে কলিন্দ্রেস পাস দেন জালালকে। কিন্তু এবার সুযোগ মিস করেন লেবানিজ ফরোয়ার্ড জালাল। ৭ম মিনিটে বসুন্ধরার ডিফেন্ডারের ভুলে গোলের সুযোগ পেয়ে বসেছিল তেরেঙ্গানু।

৯ম মিনিটে ক্ষিপ্র গতিতে বসুন্ধরার ডি-বক্সে ঢুকে যান শফিক বিন ইসমাইল। এবার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু সেভ না করলে তখনেই গোল হজম করে বসতো অস্কার ব্রুজনের দল। জিকুর ফিরিয়ে দেওয়া বলে আরো দুইবার শট নেয় প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা। রুদ্ধশ্বাস এই আক্রমণ রুখে দেয় বসুন্ধরার রক্ষণভাগ। এরপর দুই দলই সুযোগ পায় গোলের। কিন্তু ফিনিশারের অভাবে গোলের দেখা পায়নি।

অবশেষে ২৭ মিনিটে সমর্থকদের উল্লাসে ভাসান অধিনায়ক কলিন্দ্রেস। জালাল শট নিয়েছিলেন তেরেঙ্গানুর গোলপোস্ট লক্ষ্য করে। কিন্তু গোলপোস্ট মিস করে সেই বল চলে যায় বিশ্বনাথ ঘোষের পায়ে। তিনি ক্রস করেন কলিন্দ্রেসকে উদ্দেশ্য করে। লাফিয়ে উঠে হেডে তেরেঙ্গানুর গোলপোস্টে বল জড়িয়ে দেন কোস্টারিকান তারকা।

গোল হজমের পর মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় মোহাম্মদ জেইনের শিষ্যরা। ২৯ মিনিটে দুর্দান্তভাবে সেভ করে বসুন্ধরাকে বাঁচান জিকু। কিন্তু ২ মিনিটের এক ঝড়ে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায় বসুন্ধরা কিংসের। রক্ষণভাগের ভুলে দুই গোল হজম করে বসে ব্রুজনের দল। ৪৪ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর বল সেভ করতে গিয়ে ইসমাইলকে ফাউল করে বসেন ইয়াসিন খান। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। স্পট কিক থেকে শট নিয়ে জিকুকে পরাস্ত করেন লি অ্যান্ড্রু টাক।

এর পরের মিনিটে অর্থাৎ প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে একই ভুল করে বসেন বখতিয়ার দুইশোবেখভ। এবারও নিজেদের ডি-বক্সের ভেতর তিনি বাধা দেন ইসমাইলকে। এবারও পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। একই শটে আবার জিকুকে পরাস্ত করে তেরেঙ্গানুকে এগিয়ে দেন লি টাক।

বিরতি থেকে ফিরে জেতার জন্য মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় বসুন্ধরা। কিন্তু দুর্ভাগ্যই বলতে হবে। ফিনিশারের অভাবে তাদের বারবার হতাশ হতে হয়েছে। ৫৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের অল্প বাইরে ওয়ান টু ওয়ান পাস খেলে সুযোগ তৈরি করেছিল বসুন্ধরা। কিন্তু এবারও ব্যর্থ তারা। ৫৭ মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো বসুন্ধরা। কিন্তু মতিন মিয়ার ক্রস থেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন কলিন্দ্রেস। কেবল পা লাগালেই বল ঢুকে যেতো তেরেঙ্গানুর জালে। কিন্তু তা পারেননি অধিনায়ক। এর পরের মিনিটে আবার গোলের সুযোগ পান কলিন্দ্রেস। ক্রস করেছিলেন বাঁ-পাশ দিয়ে। কিন্তু কেউ না থাকায় সেই বল চলে যায় প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট ঘেঁষে।

৭৪ মিনিটে আবারও পিছিয়ে পড়ে বসুন্ধরা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি নয়নকাড়া বুলেট গতির শটে হ্যাটট্রিক করেন লি টাক। বসুন্ধরাকে আবারও হতভম্ব করে দেন বদলি হিসেবে নামা মোহাম্মদ আয়াস। তেরেঙ্গানু এগিয়ে যায় ৪-১ ব্যবধানে। তখন ম্যাচে ফেরার মতো অবস্থায় ছিল না বসুন্ধরা।

এরপর কিংসলে এলিটাকে মাঠে নামায় বসুন্ধরা। কিন্তু আক্রমণভাগে শক্তি বাড়িয়েও হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। ৮৩ মিনিটে জালালের গোলে ব্যবধান ৪-২ করেন বসুন্ধরা। শেষদিকে আক্রমণ করলেও আর গোলের দেখা পায়নি বিপিএল চ্যাম্পিয়নরা। মাঠ ছাড়তে হয় একরাশ হতাশা নিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।