বার্সেলোনার সঙ্গে লিওনেল মেসির চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২১ সালে। কিন্তু এর আগে যদি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড ক্যাম্প ন্যু ছাড়তে চান তাহলে আগ্রহী ক্লাবকে তার রিলিজ ক্লজের ৭০০ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে।
গত মঙ্গলবার বুরোফ্যাক্সের (প্রত্যায়ন পত্র) মাধ্যমে ক্যাম্প ন্যু ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন মেসি। সেই বুরোফ্যাক্সে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, চুক্তিতে যে ক্লজ আছে যা তাকে মৌসুম শেষে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ক্লাব ছাড়ার সুযোগ দিয়েছে, সেটা প্রয়োগ করতে চান। কিন্তু বার্সার দাবি, এই ক্লজের মেয়াদ গত ১০ জুন শেষ হয়ে গেছে। ফলে যেতে হলে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে। তবে মেসির আইনজীবীদের যুক্তি, করোনা মহামারির কারণে এবার মৌসুম শেষ হয়েছে দেরিতে। তাহলে ক্লজের মেয়াদ শেষ হয় কীভাবে?
এদিকে স্পেনের একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, শেষ বছরের ক্ষেত্রে ক্লজ প্রযোজ্য হবে না। ‘কাদেনা সের’ ও ‘এল লারগুয়েরো’র রিপোর্ট বলছে, ২০১৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ২০১৯/২০ মৌসুম পর্যন্ত মেসির ক্লজ প্রযোজ্য ছিল। শেষ মৌসুমের ক্ষেত্রে নয়। ফলে এখন আর ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজের কথা তুলে লাভ নেই। ফ্রিতেই যেতে পারবেন মেসি। তবে বার্সা এখনও এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি। ফলে আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি।
বার্সার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চান মেসি। কিন্তু ক্লাবের আচরণ মোটেও তার পক্ষে যাচ্ছে না। এরইমধ্যে ক্লাবের বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন মেসি। বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, বিদায় নিয়ে কোনো কথা হবে না। কথা হবে নতুন চুক্তি নিয়ে। আর যেতে চাইলে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে। কিন্তু মেসিও হাল ছাড়ার পাত্র নন। এরইমধ্যে ক্যাম্প ন্যুয়ের করোনা পরীক্ষায় উপস্থিত হননি তিনি। এমনকি তিনি সোমবার (৩১ আগস্ট) দলের অনুশীলনেও হাজির হবেন না বলে দাবি করেছে বিভিন্ন স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম।
সপ্তাহের শুরুতে ‘ইএসপিএন’র এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, মেসির বুরোফ্যাক্সের জবাব না দিলেও তার থেকে যাওয়ার বদলে নিজে পদত্যাগ করতে চেয়েছেন বার্সা প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া বার্তমেউ। তবে এজন্য মেসিকে প্রকাশ্যে বার্তমেউকে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে এবং তিনি বিদায় নিলে বার্সা অধিনায়ক থেকে যাবেন এমনটা ঘোষণা করতে হবে। তবে মেসির পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ক্লাব প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করার সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছেন।
মেসির ক্লাব ছাড়ার পেছনে মূল কারণ মাঠে দলের বাজে ফর্ম, বিশেষ করে ২০১৫ সাল থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা ব্যর্থতা। এছাড়াও বার্সার কয়েকজন বোর্ড সদস্যের সঙ্গে সম্পর্কেরও অবনতিও একটা বড় কারণ। বেশ কয়েকটি ব্যাপারে তিনি বোর্ডের বিপক্ষে মুখ খুলেছেন, যা আগে কখনো করেননি তিনি। আপাতত তার পরবর্তী ঠিকানা হিসেবে ম্যানচেস্টার সিটির নাম শোনা যাচ্ছে। ‘ইএসপিএন’ দাবি করেছে, মেসির বিনিময়ে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো দিতে চায় সিটিজেনরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২০
এমএইচএম