ঢাকা: বস্তিতে থাকা, বস্তির বাইরে থাকা এবং শহরে বসবাসরত নারী সবার মধ্যেই অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্ম দেওয়ার হার বেড়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (নিপোর্ট) এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নিপোর্ট আয়োজিত দেশব্যাপী তৃতীয় বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে (বিইউএইচএস) ২০২১-এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়।
১১টি সিটি কর্পোরেশনে বস্তির জনসংখ্যা ও বস্তি বহির্ভূত জনসংখ্যা এবং জেলা পৌরসভার অবশিষ্ট শহরের জনসংখ্যা এবং বড় শহর যেখানে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস করে এমন এলাকায় এই গবেষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে রিপোর্টের ফলাফল প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ শাহাদত হোসেন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক একে এম নুর উন নবী।
গবেষণায় বলা হয়, বস্তির বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ, শহুরে মানুষের ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ ও বস্তির ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ শিশু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেয়।
বিবাহিত নারী (বয়স ১২ থেকে ৪৯ বছর), বিবাহিত পুরুষ (বয়স ১৫ থেকে ৫৪ বছর), পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশু এবং সমাজের নেতাদের ওপর এই জরিপ করা হয়।
জরিপে উঠে আসে, বিভিন্ন হাসপাতাল কিংবা স্বাস্থ্য সেবার আওতায় হওয়া প্রতিষ্ঠানিক মোট শিশুরও বেশির ভাগের জন্ম হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া বস্তির বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর ৭৭ শতাংশ শিশুর জন্মই হয় অস্ত্রোপচারে। এছাড়া শহরে বসবাসরত ৭৫ শতাংশ ও স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া বস্তির জনগোষ্ঠীর মোট জন্মদানের ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে।
এছাড়াও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) পাওয়া গর্ভধারণ সুবিধার তুলনায় বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবায় সবচেয়ে বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে অস্ত্রোপচারে।
জরিপে উঠে আসে গগর্ভধারণ স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া বস্তিবাসীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি অস্ত্রোপচার হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। সবচেয়ে কম হয়েছে এনজিওতে, ২৫ শতাংশ।
গর্ভধারণ স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া বস্তির বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর মাঝেও সবচেয়ে বেশি ৮৭ শতাংশ অস্ত্রোপচার হয় বেসরকারি হাসপাতালে। আর বেসরকারি ও এনজিওর সেবা পাওয়াদের ৫১ শতাংশ অস্ত্রোপচারে হয়।
এছাড়া গর্বধারণ স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া শহরের শিশু জন্মদানের ও সবচেয়ে বেশি ৮৮ শতাংশ অস্ত্রোপচার হয় বেসরকারি হাসপাতালে। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় সেবা নেওয়া ৩৭ শতাংশ ও এনজিওতে সেবা নেওয়াদের ৪৭ শতাংশের।
নিপোর্ট মহাপরিচালক এবং অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহান আরা বানু, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
আরকেআর/এমএমজেড