ঢাকা: ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রথম অঙ্গদাতা সারা ইসলাম যেখানে যেত আশেপাশের সবাইকে মোহিত করে ফেলতো বলে জানিয়েছেন তার মা স্কুল শিক্ষিকা শবনম সুলতানা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গদান ও বাংলাদেশে প্রথম সফল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ জানান।
শবনম সুলতানা বলেন, সারা শুধু আমাকেই নয়, সে যেখানে যেত আশেপাশের সবাইকে মোহিত করে ফেলতো। সুন্দর ব্যবহার এবং কাজ দিয়ে সবাইকে কাছে টেনে নিতো।
অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমাকে বাইরে থাকতে হতো। সে আমাকে তখন অনেক মিস করতো। তাই মনে হয়, সে হয়তো আমার থেকে মিষ্টি একটা প্রতিশোধ নিলো, আমি যত দিন বেঁচে থাকবো, তত দিন আমি তাকে এক মুহূর্তের জন্যেও ভুলবো না, তাকে প্রতি মুহূর্তে আমি মিস করবো। ’
সারার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সে আমাকে বলতো, মা আইনস্টাইনের ব্রেন নিয়ে যেমন গবেষণা হয়, তেমনি আমার ব্রেন নিয়েও হয়তো গবেষণা হবে। কিন্তু তার সেই ব্রেনটাই ডেথ হয়ে গেল। এটা আমার জন্যে অনেক কষ্টের, তার ব্রেন যদি বেঁচে থাকতো, তাহলে হয়তো সে কাউকে দান করে যেত পারতো। সে আমাকে বলেছিল আমার শরীর সবকিছুই গবেষণার জন্য দান করে দিতে পারো। ২০ বছরের ছোট স্বর্গীয় সেই কন্যার স্মরণে বলছি, সে যেখানেই থাকবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে অনেক অনেক ভালো রাখবে। ’
তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, সারার এতটুকু জীবন সার্থক হয়েছে কিনা? সারা আগেও আমাকে বলেছিল, মা আমাকে এখানে (পৃথিবী) অবহেলা সহ্য করতে হয়েছে। ছোটবেলায় তার মুখে টিউবগুলো দেখে ভয় পেতো, কোনো বাচ্চা তার পাশে বসতে চাইতো না, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিত। তখন সে অনেক কষ্ট পেয়েছে, কেঁদেছে। এসব বলতে গেলে আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারবো না। আপনারা তার জন্যে একটা মোনাজাতের ব্যবস্থা করবেন। এখানে সারার কান্না, যন্ত্রণা, বেদনা, কষ্ট ধুয়ে মুয়ে যাক। আমি চাই আপনারা সব সময় তাকে স্মরণ করবেন। ’
আরও পড়ুন>>>‘সারা ইসলামের নাম দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
আরকেআর/এএটি