ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

রামেক হাসপাতালে দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক বরখাস্ত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪
রামেক হাসপাতালে দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক বরখাস্ত

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ছেলেকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় দুই ইন্টার্ন চিকিৎসককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।  এছাড়া ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক হলেন, ফরহাদ হাসান ও আলমগীর হোসেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহাম্মদ জানিয়েছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। একপক্ষ নয়, উভয়পক্ষ এবং সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন। তাই ঘটনা তদন্তে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম চলা পর্যন্ত দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক বরখাস্ত থাকবেন।

হাসপাতালের পরিচালক বলেন, বুধবার রাতেই তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আরও কিছু কাজ হবে। তারপরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এর আগে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কক্ষে সুমন পারভেজ রিপন (৩০) নামের এক যুবককে বেধড়ক পেটান একদল ইন্টার্ন চিকিৎসক। রিপনের মা পিয়ারা বেগম (৬০)  ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। মায়ের রিপোর্ট দেখানোকে কেন্দ্র করে বাগ-বিতণ্ডার জের ধরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাকে পেটান। ভুক্তভোগী রিপনের বাড়ি রাজশাহী মহাগরীর বোসপাড়া এলাকায়।

এদিকে সুমন পারভেজকে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। এতে রিপনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আর মাইরেন না স্যার। ম্যালা মাইরছেন ভাই। আমাকে একটু পানি খেতে দেন। আমি মরে যাব। আর আমাকে মারার কথা আম্মাকে বইলেন না। আম্মা অসুস্থ হয়ে পড়বে। ’

এ সময় ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রিপনকে মারধর করতে থাকেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালিও শুরু করেন। এছাড়া সুমনের মাথা ন্যাড়া করে দিতে চান।

সুমন পারভেজকে মারধরের ঘটনা নিয়ে রামেক হাসপাতাল পরিচালক বুধবার দিনগত রাত ১টার দিকে সাংবাদিকদের একটি বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘হাসপাতালে মাকে ভর্তির পর থেকেই রিপন বিভিন্ন সময় চিকিৎসক ও নার্সদের বিরক্ত করছিলেন। গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বুধবার দুপুরে ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার রোগীর চিকিৎসা নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন রিপন চিকিৎসকদের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেন এবং গালিগালাজ শুরু করেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং একজন ইন্টার্ন চিকিৎসককে আঘাত করেন। এতে ওয়ার্ডে সংঘর্ষের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ’

যদিও নির্যাতনের শিকার সুমন পারভেজ রিপন কোনো চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি হাসপাতালে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে মহানগরীর রাজপাড়া থানায় অভিযোগ করতে যান। তবে পরে অভিযোগ না করেই তিনি চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক।

ওসি বলেন, ওই ছেলেটা এসে বলল যে সে অভিযোগ করবে। কিন্তু অভিযোগ না করেই চলে গেছে। তিনি পরে হাসপাতালে ফোন করে জানতে পেরেছেন যে, সুমন পারভেজ রিপনের মাকে এরই মধ্যে ছুটি দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা বাইরে চিকিৎসা করতে চান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৪
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।