ঢাকা: জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ সফল করতে এরইমধ্যে দেশের ৬৪ জেলার ৮২ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে গেছে কৃমিনাশক ওষুধ মেবেন্ডাজল। আগামী ৪ থেকে ১০ নভেম্বর সারাদেশে বিদ্যালয়গামী শিশুদের জন্য কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন করা হবে।
কৃমি নিয়ন্ত্রন সপ্তাহ উপলক্ষে সারাদেশে ৫-১২ বছর বয়সী সব শিশুকে এক ডোজ মেবেন্ডাজল (৫০০মি.গ্রা.) সেবন করানোর কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শাখার লাইন ডাইরেক্টর ডা. বেনজীর আহমেদ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলানউজকে বলেন, কার্যক্রমটি প্রতিটি স্কুলে পরিচালিত হবে। সপ্তাহব্যাপী দেশের প্রায় ৮২ হাজার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি শিশুকে বিনামূল্যে কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করানো হবে।
ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, এরইমধ্যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওষুধ মেবেন্ডাজল পাঠানো হয়েছে। জেলাগুলোতে সংসদ সদস্য এবং সিভিল সার্জনরা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্রাও এ কর্মসূচি সফল করতে অংশ নেবে।
বেনজির আহমেদ বলেন, এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ শিশুদের কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করানো হয়। ফলে, শিশুদের কৃমি সংক্রমণের হার ২০০৫ সালে প্রায় ৮০ শতাংশ থাকলেও তা হ্রাস পেয়ে ২০১২ সালে ২০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
কৃমিনাশক ওষুধ সেবন কার্যক্রমে চিলড্রেন উইদাউট ওয়ার্ম ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৪টি জেলার জন্য মেবেন্ডাজল সরবরাহ করেছে।
২০১২ সাল থেকে তারা ৬৪টি জেলার জন্যই মেবেন্ডাজল অনুদান হিসেবে সরবরাহ করছে বলে জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সফল করতে হলে গ্রাম ও শহরে একসঙ্গে কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের সচেতনতা বাড়াতে হবে। শহরগুলোতে শিশুদের মধ্যেও কৃমি সংক্রমণ ঘটে থাকে। এজন্য শহরের সবারই নিয়মিত ওষুধ সেবন করা উচিত।
এ ব্যপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে শিশু মৃত্যুর হার কমে এসেছে। দেশের এ সাফল্য আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। শিশু স্বাস্থ্যের মান উন্নয়নে কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে সরকার বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পরিচালনা করছে। এজন্য দেশের ভেতরে বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয় জোরদার করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও বেড়েছে।
বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকে সারা দেশব্যাপী বিদ্যালয়গামী ৫-১২ বছর বয়সী শিশুদের প্রতি বছরে মে ও নভেম্বর মাসে কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১২
এমএন/এআর/সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর