ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ আশ্বিন ১৪৩২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

ফিজিওথেরাপি সেন্টারে ‘অবৈধ অভিযান’ বন্ধের দাবি বিপিএর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪১, জুলাই ১২, ২০২৫
ফিজিওথেরাপি সেন্টারে ‘অবৈধ অভিযান’ বন্ধের দাবি বিপিএর শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে ফিজিওথেরাপি পেশাজীবীদের জাতীয় সংগঠন বিপিএ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের ফিজিওথেরাপি পেশাজীবীদের জাতীয় সংগঠন বিপিএ সম্প্রতি ফিজিওথেরাপি সেন্টারে পরিচালিত ‘অবৈধ অভিযান ও হয়রানি’ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

শনিবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এই দাবি জানায়।

 

বিপিএর অভিযোগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ফিজিওথেরাপিস্টদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি আদালত অবমাননার শামিল।

সংবাদ সম্মেলনে বিপিএ তুলে ধরে, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত একটি ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অভিযান চালিয়ে একজন ফিজিওথেরাপিস্টকে প্রেসক্রিপশন লেখা ও ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন, ২০১০ অনুযায়ী কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেন। একইভাবে গত ১ জুলাই হবিগঞ্জে একজন সিনিয়র ফিজিওথেরাপিস্টকেও একই আইনের ২৯ ধারা অনুযায়ী কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

বিপিএর সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্বকাল থেকেই ফিজিওথেরাপিস্টরা ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করে আসছেন এবং স্বাধীনতার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গেজেটেও তাদের ‘ডাক্তার’ পদবিতে উল্লেখ করা হয়েছে।  

তিনি আরও জানান, ২০১০ সালের বিএমডিসি আইনে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় বিপিএ সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে এবং সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী স্নাতক ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপিস্টদের পদবি ও প্র্যাকটিসের ক্ষেত্রে বিএমডিসি আইন প্রযোজ্য হবে না।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৭১ নং আইন)-এর ধারা ৬ এর ‘চ’ অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে প্রদত্ত স্বাস্থ্যসেবা পরিদর্শন, অনুমোদন ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের (বিআরসি) ওপর ন্যস্ত। আইনের ধারা ১৪-এর ১ অনুযায়ী, বাংলাদেশে আলাদাভাবে কোনো ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার কিংবা হাসপাতালের অধীনে কোনো ফিজিওথেরাপি ইউনিটের অনুমোদন ও পরিদর্শনের দায়িত্বও বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা অধিভুক্ত কোনো সিভিল সার্জন দপ্তর দায়িত্বপ্রাপ্ত নন।

ডা. শাহাদাৎ হোসেন আরও উল্লেখ করেন, বিআরসি একটি সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা যা ২০১৮ সালে আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি ফিজিওথেরাপিস্টদের পেশাগত প্র্যাকটিস, ফিজিওথেরাপি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র অনুমোদন, ফিজিওথেরাপি কারিকুলামের স্বীকৃতি ও ফিজিওথেরাপি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি প্রদান করে। বিআরসি আইন ২০১৮-এর ধারা ২ এর ১২ অনুযায়ী, ফিজিওথেরাপিস্টরা ‘প্র্যাকটিশনার’ অর্থাৎ তারা স্বাধীনভাবে রোগী দেখে ফিজিওথেরাপি প্রেসক্রিপশন করেন। এ আইনের ধারা ২ এর ৯ ও ১০ অনুযায়ী, রিহ্যাবিলিটেশন টেকনোলজিস্ট ও টেকনিশিয়ানগণ স্নাতক ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপিস্টদের তত্ত্বাবধানে ফিজিওথেরাপি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেন।

বিপিএর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নেছার উদ্দিন সরকারের তরফ থেকে দ্রুত এমন অভিযান বন্ধ করে সংশ্লিষ্টদের পেশা পরিচালনায় সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।

ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।