হৃদরোগ চিকিৎসায় এ বিশেষায়িত হাসপাতালটি খুলনা অঞ্চলে অর্জন করেছে সাধারণ মানুষের আস্থা। ভারতের নামকরা হৃদরোগ হাসপাতাল ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় প্রাথমিক পর্যায়ে খুলনায় কাজ করলেও বর্তমানে দেশের অন্য অঞ্চলেও হৃদরোগের চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারণ করছে।
এ হাসপাতালটির বিশেষত্ব হলো বিশ্বমানের চিকিৎসক, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি এবং সেবার মান নিয়ন্ত্রণে ভারতের ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটউটের সরাসরি তত্ত্বাবধান। এছাড়াও ভারতের ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটউট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অনলাইনে রোগীদের সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা মনিটর করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন, যা বাংলাদেশে হৃদরোগীদের জন্য প্রথম।
খুলনা শহরের প্রাণকেন্দ্রে সোনডাঙ্গার মজিদ সরণির এ হার্ট ইনস্টিটিউটের সেবা সম্পর্কে ঢাকায় কথা হচ্ছিলো প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট (কার্ডিওলজি) ডা. এস.এম. মামুন ইকবালের সঙ্গে।
ভারতের ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটউট জনশক্তি, চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ, রোগীদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
খুলনার এ প্রতিষ্ঠানের ফ্যাসিলিটি ডিরেক্টর এবং চিফ নার্সিং অফিসার দু’জনই ফরটিস এসকর্টস’র নিয়োগপ্রাপ্ত, এছাড়াও সব চিকিৎসক ফরটিস এসকর্টস থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
“আইসিইউ বা সিসিইউতে ভর্তি যেকোনো রোগী স্থানীয় কনসালটেন্টের পাশাপাশি দিল্লির কনসালটেন্টের তত্ত্বাবধানেও থাকেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দিল্লির কনসালটেন্টরা সার্বক্ষণিক মনিটর করেন এবং প্রয়োজনে শক্তিশালী ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন দিয়ে কানেক্ট হয়ে রোগীর অবস্থান অ্যানালাইসিস করে স্থানীয় কনসালটেন্টের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ইনপুট দেয়। ”
এ সেবাটি এএফসি হেলথ ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটউটের একটি ইউনিক সেবা- বলেন ডা. ইকবাল।
চব্বিশ ঘণ্টা হৃদরোগীদের যেকোনো ধরনের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় এ হাসপাতালে, এমনকি হৃদরোগীদের জীবন রক্ষাকারী জরুরি সেবা প্রাইমারি পিসিআই ও হয় দিনে-রাতে যেকোনো সময়ে। ওপেন হার্ট সার্জারিসহ অন্যান্য হার্ট সার্জারির সেবাও পাওয়া যায় খুলনায় বসেই।
প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত প্রাইমারি পিসিআই সেবা দেয়া হয়েছে ১৫০ জনেরও বেশি রোগীর, অনেক রোগীর হার্টে রিং পরানো হয়েছে এবং ওপেন হার্ট সার্জারিও হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক।
এছাড়াও হার্ট ফেইলর থেকে অনিয়মিত হৃদস্পন্দনসহ রোগীদের সব রকম চিকিৎসা হয় এখানেই।
প্রশ্ন ছিল চিকিৎসার ব্যয় কেমন? সাধারণত অন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ কম খরচে এখানে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় বলে জানান ডা. ইকবাল।
প্রাইমারি পিসিআই চার দিন চার রাত ৮৫ হাজার টাকা, যা অন্য হাসপাতালে দেড় লাখ টাকা। মাত্র ১৬ হাজার টাকায় এনজিওগ্রাম, ৭০ হাজার টাকায় (রিং এর খরচ বাদে) এনজিওপ্লাস্টি এবং ৬৫ হাজার টাকায় পার্মানেন্ট পেসমেকার ইমপ্ল্যান্ট করা যায় এ হার্ট ইনস্টিটিউটে। স্বল্প খরচে সিসিইউ এবং আইসিইউ সুবিধা রয়েছে এ হার্ট ইনস্টিটিউটের।
হাসপাতালটির আরেকটি অনন্য সেবা রয়েছে। রাজধানীর অনেক হাসপাতাল যখন রোগী আটকে রেখে অর্থ আদায় করে। আবার কেউ কেউ রোগী মারা গেলেও অহেতুক কালক্ষেপন করে অর্থ আদায় করে। ঠিক সেই সময়ে ফরটিস কেন রোগী মৃত্যুবরণ করলে শেষ ২৪ ঘণ্টার বিল মওকুফ করে দেয়।
৫৩ শয্যার এ হাসপাতালে খুলনা অঞ্চলের রোগীদের আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে। হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিক, টেকনিশিয়ান, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব মিলে রয়েছে আড়াইশ কর্মী।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে হৃদরোগের চিকিৎসা সেবা শুরু করেছে এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউট। এক-দুই মাসের মধ্যে কুমিল্লাতে এবং শিগগিরই সিলেট, বগুড়া এবং বরিশালে সেবা সম্প্রসারণে কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
মানুষের দোড়গোড়ায় চিকিৎসা সেবা এবং হাতের নাগালে নির্ভেজাল ওষুধ সুবিধা নিশ্চিত করাই এএফসি হেলথ লিমিটেডর লক্ষ্য, বলেন ডা. এস.এম. মামুন ইকবাল।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ