একবার স্কুলে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মেয়েটি খুব শখ করে অংশগ্রহণ করে, কিন্তু হিটেই আউট হয়ে গিয়ে ভীষণ কষ্ট পায়। মূলত শরীর নিয়ে নে পারেনি।
এই ঘটনার বর্ণনা খুলনার এক হাসপাতালের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশ্বমানের হার্ট সার্জারির সুবিধা দিচ্ছে এই হাসপাতালটি। যা এশিয়া মহাদেশের অন্যতম সেরা কার্ডিয়াক হাসপাতাল ‘ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউট’ এবং বাংলাদেশের এএফসি হেলথ লিমিটেড যৌথভাবে পরিচালনা করে আসছে।
বাইরে থেকে দেখতে অন্য সব হাসপাতালের মতোই কিন্তু ভেতরে বিশ্বের তাবৎ নামিদামি কোম্পানির অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিতে ভরপুর। যা বাংলাদেশের অনেক আলোচিত হাসপাতালেও নেই।
হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটার সাজানো হয়েছে সর্বশেষ সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি দিয়ে। বসানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ব্র্যান্ডের লেটেস্ট হার্ট লাং মেশিন। রোগীর শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য রয়েছে স্বয়ংক্রিয় হিট এক্সচেঞ্জার। এই মেশিনটিও যুক্তরাষ্ট্রের এবং এর চেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি এখনও বাজারে আসেনি।
অপারেশন থিয়েটার বাইরের জীবাণু থেকে মুক্ত রাখতে দুই স্তরের এয়ার টাইট প্রটেকশন ব্যবহার করা হয়েছে।
‘বিশ্বমানের এই অপারেশন থিয়েটারে ওপেন হার্ট সার্জারিসহ হার্টের যেকোনো সার্জারি নিয়মিতই হচ্ছে’, বললেন কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট ডা. এওয়াইএম শহীদুল্লাহ।
ডা. শহীদুল্লাহ বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে সফলতার সঙ্গে হার্ট সার্জারির সঙ্গে যুক্ত।
ফরটিস এসকর্টসের অপারেশন থিয়েটার, সিআইসিসিইউ এবং সিসিইউ পুরোটাই ভিন্ন মাত্রার। দিল্লি থেকে অনলাইনে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং করা হয় সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে। রোগীর অবস্থার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজন হলে দিল্লির বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বোর্ড মিটিং করে ব্যবস্থাপত্র দেন।
অন্যান্য হাসপাতালে হালকা মনে করে ছোট ছোট কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ফরটিস এসকর্টস সেটাকেও খুব সিরিয়াস হিসেবে নিয়ে থাকে বলে জানালেন ডা. শহীদুল্লাহ।
রোগীকে দেখভাল করার জন্য এখানে সিআইসিইউতে প্রত্যেক বেডের জন্য সার্বক্ষণিক একজন করে নার্স থাকেন। সরাসরি দিল্লি থেকেও কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফ্যাসিলিটি ডিরেক্টর রয়েছে দিল্লির নিয়োগপ্রাপ্ত। নার্সিং বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন কেরালার অভিজ্ঞ নার্স।
চিকিৎসা সেবার মান যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় তেমনি ওষুধের মানেও রয়েছে কঠোর নজরদারি। ডা. শহীদুল্লাহ জানান, ভালো মেডিসিন না হলে সঠিক চিকিৎসা সম্ভব না। সে কারণে আমাদের ফার্মেসিতেও কঠোর মনোযোগ রয়েছে। কোটি টাকা খরচ করে বসানো হয়েছে মেডিসিন টেস্ট মেশিন। ফার্মেসিতে ওষুধ প্রবেশ করানোর আগে মান যাচাই করা হয়। যাতে কোনভাবে ফাঁক গলে মানহীন এবং ভেজাল ওষুধ প্রবেশ করতে না পারে। আবার ফার্মেসির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয় কঠোরভাবে।
এতো কিছু নিশ্চিত করার পরও রাজধানী ঢাকার তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী খরচে হার্টের সব ধরনের অপরেশন করা হয়। সাশ্রয়ী খরচে দিল্লি মানের হার্ট সার্জারি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে খুলনাতে বসেই।
‘ওপেন হার্ট সার্জারিসহ যেকোনো ধরনের হার্ট সার্জারির ভার আমাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিত হতে পারেন রোগী এবং তার স্বজনরা’, বললেন ডা. শহীদুল্লাহ।
এও বলেন, ‘এএফসি হেলথের লক্ষ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সব বিভাগীয় শহরেই হার্ট সার্জারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়া’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৭
এমআইএইচ/আইএ