ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

অটিজম : চাই ধৈর্য ও সংবেদনশীলতা

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১১
অটিজম : চাই ধৈর্য ও সংবেদনশীলতা

টু ভালোভাবে খেয়াল করলে আমাদের চারপাশের অনেক পরিবারেই কোনো না কোনো অটিস্টিক শিশু দেখতে পাব। রোগটির নাম অটিজম।

এটি শিশুর এমন এক মানসিক রোগ, যা তার মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের প্রতিবন্ধকতার কারণে  হয়।   প্রতি ১০ হাজার ০ শিশুর মধ্যে ৫জনের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এ রোগে আক্রান্ত ছেলেশিশুর হার মেয়েশিশুদের  তুলনায় চার-পাঁচ গুণ বেশি।

অটিজমে আক্রান্ত শিশুর জন্মের তিন বছরের মধ্যেই বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। শিশুটি আশপাশের কারো সাথে সামাজিক যোগাযোগ বা ভাব বিনিময়ে অস্বাভাবিক রকম পিছিয়ে থাকে। চোখের ইশারা বা অন্যর ইশারা বোঝা, কথার জবাব দেওয়া, সমবয়সী ও অন্য বয়সী শিশুদের সাথে খেলাধুলা বা ভাববিনিময় করাসহ নানা কিছুতে তারা অনেকটাই অসমর্থ থাকে। অটিস্টিক শিশুকে সামাজিক হাসি বিনিময় করতে দেখা যায় না। অনেক সময় অর্থহীন কথা বা ছড়া বলে, একা একা একই ধরনের খেলা খেলে চলে, মাথা বা শরীর ঝাঁকায়, দাতে দাত ঘষে বা কিড়মিড় শব্দ করে কিংবা অমনোযোগহীনতা ও পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ করে।   কিন্তু সব অটিস্টিক শিশুর আচরণ একরকম নয়, বিভিন্ন শিশু বিভিন্ন ধরনের ধরনের আচরণজনিত সমস্যায় ভোগে। তাদের লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে থাকতে পারে। তবে এদের মধ্যে অনেক শিশুরই কৈশোরের দিকে কিছুটা উন্নতি হয়।

অটিজমের নির্দিষ্ট কারণ এখনো বিজ্ঞানীদের অজানা। আর এ ধরনের শিশুরা এ রোগের কারণে অন্য কোনো শারীরিক সমস্যায়ও ভোগে না। অবশ্য অনেকেরই স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম আইকিউ থাকে।

অটিজম এখন পর্যন্ত ওষুধে ভালো হওয়ার মতো কোনো রোগ নয়। সাইকোথেরাপিও এ রোগ থেকে শিশুকে মুক্তি দিতে পারে না। কিন্তু এজন্য কোনো ঝাড়ফুক বা কুসংস্কারের আশ্রয় না নিয়ে বরং যত দ্রুত সম্ভব শিশুটিকে যথোপযোগী শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা উচিত। এর মাধ্যমে শিশুর দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতাগুলি খুঁজে বের করে তা দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি শিশুটির মাঝে কী প্রতিভা আছে তাও খুঁজে বের করতে হবে। আর সেই প্রতিভার বিকাশে শিশুটিকে সার্বিকভাবে সহায়তা  দিতে হবে। এর ফলে শিশুটি তার সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে সচেষ্ট হবে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই অটিস্টিক শিশুর জন্য এমন শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে।

অটিস্টিক শিশুর আচরণগত অস্বাভাবিকতা থাকায় পরিবারের অনেকের মনে বিরক্তির সৃষ্টি হতে পারে। অভিভাবকদের এ ব্যাপারে খুব সচেতন ও যত্নবান হতে হবে। ধৈর্য আর সংবেদনশীলতা নিয়ে শিশুটির স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে। এ ধরনের শিশুরাও অনেক ভালো ও গঠনমূলক কাজ করতে পারে। তাই পুরোপুরি হতাশ হওয়া যাবে না।

কিছু আচরণগত লক্ষণ দেখে অটিজম নির্ণয় করতে হয় :
* যদি এক বছরের মধ্যেও শিশুটি মুখে কোনো আওয়াজ না করে বা ইশারা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে কিছু না বোঝায়;
* দেড় বছরের মধ্যে যদি এক শব্দের মিশ্রণে কোনো বাক্য না বলে;
* দুই বছরের মধ্যে যদি দুই শব্দের কোনো বাক্য না বলে;
* তিন বছর বয়সের মধ্য যদি শিশুটির কথা বা আচরণ হঠাৎ পরিবর্তিত যায়।

ওপরের লক্ষণগুলো যদি থাকে, তাহলে হতে পারে যে শিশুটি অটিজমের শিকার হয়েছে।

এমনটি হলে যথাশীঘ্র শিশু মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ বা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এবং সঠিক দিকনির্দেশনা মেতে চলতে হবে।

বিভিন্ন ওয়েবসাইট অবলম্বনে

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৯৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।