ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে চট্টগ্রাম বন্দর বাইপাস সড়কের পাশে ২৮ দশমিক ৪২ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। শান্ত মনোরম পরিবেশে আন্তর্জাতিক মানের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের জন্য সকল কিছুই থাকছে এখানে।
প্রাথমিকভাবে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিয়ে কাজ শুরু করতে চায় সরকার। ইতোমধ্যে ‘চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন’ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রজেক্ট প্রস্তাব) তৈরি করেছে সরকার। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি’র ওপর চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা আয়োজন করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এরপরেই প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ১৫ তলা বিশিষ্ট আড়াই হাজার বর্গফুট রেসিডেন্স ইউনিট, ১৫ তলা বিশিষ্ট ৮০০ বর্গফুটের মোট ৫৬টি রেসিডেন্স ইউনিট নির্মাণ করা হবে। ১৩০ জন নারী ও ১৩০ জন পুরুষ ডাক্তারের জন্য ১৫ তলা বিশিষ্ট পৃথক পৃথক আবাসন হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। ২৫০ জন ছাত্র ও ২৫০ জন ছাত্রীর জন্য ১৫ তলা বিশিষ্ট হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। দুই তলা বিশিষ্ট উপাচার্য ভবন, চার তলা বিশিস্ট গেস্ট হাউজ ও চার তলা বিশিষ্ট একটা মসজিদ নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও একটি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থাকবে ক্যাম্পাসে।
আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের যুগ্ম-প্রধান (স্বাস্থ্য উইং) সাজিদা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামে একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। এই উপলক্ষে একটি প্রকল্প স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আমাদের নিকট পাঠিয়েছে। প্রকল্পের বিষয়ে আমরা পিইসি সভা করবো। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে স্বাস্থ্যবিষয়ক সকল খাতের উন্নয়ন হবে। শুধু চট্টগ্রাম নয় দেশের সকল মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় অবদান রাখবে প্রকল্পটি। এর অধিভুক্ত ২৬টি ইনস্টিটিউশন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে থাকছে মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল, নার্সিং, টেকনোলজি, আয়ুর্বেদিক ও অপটিমেট্রিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইনানুযায়ী ২৬টি ইনস্টিটিউশনের তদারকির দায়িত্বে থাকছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে ছয়টি সরকারি, ১০টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, দু’টি ডেন্টাল কলেজসহ নার্সিং, টেকনোলজি, আয়ুর্বেদিক ও অপটিমেট্রিক টেকনোলজিস্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ও সনদপ্রদান করা হবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উচ্চতর শিক্ষা, সেবা ও গবেষণার মানোন্নয়নে ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। সেইসঙ্গে তিনি সকল বিভাগে একটি করে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেন। সেই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দেশের চিকিৎসাখাতে উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ করবে। পাশাপাশি অধিভূক্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত থাকবে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
এমআইএস/এমকেআর