আইইডিসিআরের কাছে ডেঙ্গু সন্দেহে ১৮৫ জন মৃত রোগীর তথ্য এসেছে। এর মধ্যে ৯৬টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৫৭টি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মৃত্যু হওয়ার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে সেটা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হয়। এ জন্য বেশ সময়ের প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মৃত ৫৭ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে এপ্রিলে ২, জুনে ৫, জুলাইয়ে ২৮ এবং আগস্টে ২২ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার ০১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ৮৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা ছিল ৯০২ জনে। অর্থাৎ এই সময়ে রোগী কমেছে ৩৭ জন।
সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে রাজধানীর ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে দুই হাজার ১১৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। কিছুদিন আগেও এই সংখ্যা পাঁচ হাজারের ঘরে ছিল। একই সময়ে ঢাকার বাইরে এক হাজার ৭৫৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে আরও নতুন ৩৯৬ জন ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার বাইরে আরও ৪৬৯ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৮২, মিটফোর্ডে ৫৪, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৯, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩৩, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮, পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগে ৫, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪৬, বিজিবি হাসপাতাল পিলখানা ঢাকায় ১, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৬, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৯ ও কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ১, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান পঙ্গুতে তিনজনসহ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে মোট ২৮৭ জন ভর্তি রয়েছেন।
ঢাকা শহর ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১০৯, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭২, খুলনায় ১৪৩, রংপুরে ১৭, রাজশাহীতে ৪২, বরিশালে ৬১, সিলেটে ৯ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন ২৪ ঘণ্টায়।
হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন ৭১ হাজার ৯৭ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র গ্রহণ করেছেন ৬৬ হাজার ৬৫৮ জন। অর্থাৎ আক্রান্তদের ৯৫ ভাগ রোগীই ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছর জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে-তে ১৯৩, জুনে এক হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ এবং চলতি সেপ্টেম্বরের দুই দিনে ৮৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯
এমএএম/টিএ