যক্ষ্মা রোগে ব্যবহৃত বহুল প্রচলিত ওষুধ রেজিস্ট্যান্ট হয়েছে। যে কারণে এ ওষুধ ব্যবহার করে দেশে যক্ষ্মা নির্মূল করা সম্ভব হবে না।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিরিন তরফদার এবং কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ডা. বায়েজীদ বিন মনির পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।
গবেষকদ্বয়ের মতে, যক্ষ্মার জন্য দায়ী জীবাণুর নাম মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস। এই জীবাণুর বিভিন্ন প্রজাতির বিশ্বের বিভিন্ন ভৌগলিক পরিবেশ বিদ্যমান। তাদের এই বৈশ্বিক বিস্তার ও বিভিন্নতা এদের ওষুধ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে তারা জানান, ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চালানো এ গবেষণায় বিএসএমএমইউ'র মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি বিভাগে ৩৩টি প্রি-এক্সডিআর ও ১১টি এক্সডিআর যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর কফ নমুনা থেকে যক্ষ্মার জীবাণুর বিভিন্ন প্রজাতির শনাক্তকরণ এবং এসব প্রজাতির সঙ্গে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সম্পর্ক নিরূপণের জন্য একটি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে।
প্রজাতি শনাক্তকরণের জন্য গবেষণাটিতে ২৪টি বিন অ্যাপ্লিকেশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। যা বৈশ্বিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতি শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত। এছাড়া গবেষণাটিতে মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিসের ওষুধ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখার জন্য লাইন প্রোব অ্যাসে ব্যবহার করা হয়েছে।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, যে বাংলাদেশে বিদ্যমান প্রি-এক্সডিআর যক্ষ্মা ও এক্সডিআর জীবাণুর মধ্যে 'মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস বেইজিং' প্রজাতি সর্বাধিক বা ৫০ শতাংশ। এছাড়াও আরও ছয় প্রজাতির জীবাণু বাংলাদেশে বিদ্যমান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিরিন তরফদার বাংলানিউজকে জানান, চিকিৎসা সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন না করা ও চিকিৎসায় আরোগ্য না হওয়া রোগীদের মধ্যে বেইজিং প্রজাতির হার সর্বাধিক। সাম্প্রতিক সংক্রমণ চোখে দেখা যায় বেইজিং প্রজাতির সাম্প্রতিক সংক্রমণের জন্য দায়ী। চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলোর মধ্যে লেভোফ্লক্সাসিন ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে বলে আমরা গবেষণায় পেয়েছি। আর এই ধরনের গবেষণা দেশে এই প্রথমবার সম্পন্ন হয়েছে।
‘যার মাধ্যমে প্রি-এক্সডিআর যক্ষ্মা ও এক্সডিআর যক্ষ্মার মধ্যে মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিসের বিভিন্ন প্রজাতি শনাক্ত হলো। এই গবেষণার ফলাফল আমাদের দেশের চলমান যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিভিন্ন স্তরের প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার পরিবর্তনে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমরা মনে করি। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৯
এমএএম/এএ