ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বছরের ১ম দিনেই ৭ ডেঙ্গু রোগী, রয়েছে শীতকালীন রোগের প্রকোপ

মাসুদ আজীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২০
বছরের ১ম দিনেই ৭ ডেঙ্গু রোগী, রয়েছে শীতকালীন রোগের প্রকোপ

ঢাকা:  ডেঙ্গুর মৌসুম না হলেও বছরের প্রথম দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ জন। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চলতি বছরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি পূর্বের তুলনায় আরও ভয়াবহ হতে পারে। যদিও সদ্য বিদায়ী ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জন চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এর সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে শীতকালীন রোগের ব্যপক প্রকোপও লক্ষ করা গেছে।

বুধবার (০১ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম) ডা. আয়েশা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানের হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৭ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ৩ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪ জন।

তবে এই সময়ে এ রোগে কোনো মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। ফলে ডেঙ্গুর মৌসুম না থাকলেও এ রোগ এখন বছরব্যপী বিস্তার লাভ করেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ বছর মৌসুমে ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য সেবা) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এ প্রসঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের ডেঙ্গুর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পরপর দুই বছর একই দেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করে না।

গত বছরের এপ্রিল থেকে দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয় ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান ছিল। তবে গত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এটি মহামারি রূপ ধারণ করে। এই সময়ে সারাদেশে কয়েক লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় চিকিৎসা গ্রহণ করেন। যার মধ্যে তিন শাতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ১৩৫৪ জন এবং মৃতের সংখ্যা ১৫৬ জনে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর তথ্য অনুসারে গত বছর ডেঙ্গুতে ২৬৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২৪৯ জনের মৃত্যুর তথ্য বিশে­ষণ করে ১৫৬ মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার শীতকালীন রোগে আক্রান্তের হিসাব সম্পর্কে জানান, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে ৪৮ হাজার ৩৯৬ জন শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত রোগে  আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেছে এবং মৃত্যুবরণ করেছে ১৭ জন। এছাড়া ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৬২ জন ও মৃত্যুবরণ করেছে ৪ জন এবং অন্য অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৮৭ জন চিকিৎসা গ্রহণ করেছে ও মৃত্যুবরণ করেছে ৩০ জন। অন্য অসুস্থতার মধ্যে রয়েছে জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর ইত্যাদি। আর এসব শীতকালীন রোগে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও সর্বোচ্চ মৃত্যুবরণ করেছে ঢাকা শহরসহ ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায়।

তাছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শীতকালীন এ রোগের প্রকোপের হিসাব দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আগত রোগীদের তথ্য অনুসারে। বেসরকারি হাসপাতালের হিসাব এক্ষেত্রে নেই। এছাড়া আঞ্চলিকভাবে তথা শীতে প্রায় প্রতি ঘরে ঘরেই এ রোগের প্রকোপ রয়েছে। আবার এবারের শীতে শৈত্য প্রবাহের মাত্রা বেশি হওয়ায় এসব রোগের বেশি বিস্তার ঘটছে বা ঘটবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২০
এমএএম/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।