ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ: প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২০
করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ: প্রতিরোধ ও চিকিৎসা অণুবীক্ষণ যন্ত্রে করোনা ভাইরাসের জীবাণু

বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক তৈরি করা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) তিনজন রোগীকে বাংলাদেশে শনাক্ত করা হয়েছে।

রোববার (০৮ মার্চ) রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটিতে সংক্রমণের তথ্য জানা যায়।

২০১৯ সালের নভেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম প্রাদুর্ভাবের পর রোববার পর্যন্ত বিশ্বের ১০৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণে এরইমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রাণ হারিয়েছেন তিন হাজার ৬৬২ জন রোগী। এরমধ্যে শুধু চীনেই মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ৯৮জনের।

দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে এখনো স্বীকৃত কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ায় এর প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। আর সে কারণেই ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক।  

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও লক্ষণ
অনেকগুলো ধারণার একটি হলো- মাছ ও মাছের বাজার থেকে এ ভাইরাস সংক্রমণের উৎপত্তি। রোগীর হাঁচি বা কাশি থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকেও যে কেউ এতে আক্রান্ত হতে পারে।

চিকিৎসকরা দেখেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর সাধারণ জ্বর ও শুকনো কাশি শুরু হয়। একইসঙ্গে রোগীর মাথা ব্যথা ও পেশিতে ব্যথা হতে পারে। সংক্রমণের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরুর সম্ভাবনা থাকে এবং এর জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

তবে এ লক্ষণ থাকলেই যে কেউ করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হবে, তা নয়। সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা বা ফ্লুতেও এধরনের লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

সঠিক সময়ে চিকিৎসা ও পরিচর্যা না করলে সংক্রমণের তীব্রতায় নিউমোনিয়া, শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহ, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অচল হয়ে যাওয়ার পর রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, সংক্রমণের ১৪ দিনের মধ্যে রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাসের আক্রমণের লক্ষণ দেখা যাবে। তবে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, সংক্রমণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

বিমানবন্দরে এক যাত্রীর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষা করা হয়েছে

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসা 
যেহেতু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কোনো চিকিৎসা বা প্রতিষেধক নেই, তাই সতর্কতাই এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায়।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া সতর্কতার জন্য মাস্ক ব্যবহারেরও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। হাঁচি-কাশিতে টিস্যু বা কাপড় ব্যবহার অথবা এর অবর্তমানে পোশাকের অংশবিশেষ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

যেহেতু রোগীর সংস্পর্শ ও সংসর্গ থেকে ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে, তাই বিভিন্ন দেশে অভিবাদনের জন্য সাধারণ হাত মেলানো, চুমু খাওয়া ও কোলাকুলি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এর বদলে হাত নাড়ানো, চোখে চোখ রাখা বা কাঁধ চাপড়ানোর জন্য বলা হচ্ছে। পাশাপাশি ভিড় বা গণজমায়েত এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কেউ যদি মনে করেন তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, তখন নিজের ঘর থেকে বের না হয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
এবি/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।