ঢাকা: শীতকালে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বা ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ আসবে, এমন আশঙ্কা করছেন অনেকেই। কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই।
বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে এ কথা বলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর।
তিনি বলেন, শীতকালে ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। কারণ সেসব দেশে এ ঋতুতে তাপমাত্রা অনেক কমে গেছে। কোথাও কোথাও তা মাইনাসের নিচে। ফলে বাইরের চেয়ে ছাদের নিচে মানুষের সমাগম বেড়েছে। ফল হিসেবে বেড়ে করোনা সংক্রমণ। আমাদের এখানে এখন বাইরে মানুষের চলাফেরা বেশি। এই সমাগম ঘরে বা আবদ্ধ স্থানে হলেই করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, শীতকালে করোনা ভাইরাসের ওপর বাংলাদেশের তাপমাত্রার কোনো প্রভাব নাও পড়তে পারে। কারণ ইউরোপ-আমেরিকার মতো আমাদের দেশে শীত পড়ে না। এখানে শীতকালে সাধারণ রোগ যেমন- বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শ্বাসতন্ত্রের রোগ বেশি হয়। যাদের অ্যাজমা সমস্যা আছে তাদের ভোগান্তি বেড়ে যায়। এর মধ্যে কারো যদি করোনা (কোভিড-১৯) হয়, তাহলে তার অবস্থা আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। তাই সবার সাবধান থাকতে হবে, দ্বিতীয় ঢেউ আসুক বা না আসুক।
এস এম আলমগীর বলেন, শীতকালে করোনার ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ আসবে এটার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। মানুষ যেটা ধারণা করছে। সেটা কাল্পনিক চিন্তা মাত্র। এটা আসতেও পারে নাও আসতে পারে। দীর্ঘ আট দশ মাসে করোনা ভাইরাসের চরিত্র (গঠন ও প্রকৃতি) পরিবর্তনও হতে পারে। এটা আগের মতো নাও থাকতে পারে। তবে সাবধান থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই এখন করোনা মোকাবিলার প্রধান উপায়।
তিনি বলেন, এখন সরকার, এনজিও এমনকি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলো কাজ করছে। সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে। সবাই একই কথা বলে আসছে, সবার ওপরে যেটা দরকার ব্যক্তিগত সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এখন আমেরিকা বলছে, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাই ভ্যাকসিনের মতো কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন এলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভ্যাকসিন কত দিনে আসবে আর এলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কতটুকু কার্যকর হবে তাও বলা মুশকিল। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।
শীতকালের আগাম সতর্কতা হিসেবে ঠাণ্ডাজনিত রোগ ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা ও পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা, আরও পিসিআর মেশিন স্থাপন ও পরীক্ষার বাড়ানো, টেলিমেডিসিন চিকিৎসা পরিধি বাড়ানো এবং জনসচেতনতা গড়ে তোলার দিকে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
পিএস/এজে