ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই পক্ষের হট্টগোল হইচইয়ের কারণে রোগীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে পরিস্থিতি সামাল দেন কলেজ প্রিন্সিপাল টিটো মিয়া ও পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রথা বাতিলের দাবিতে ঢামেকের চতুর্থ শ্রেণীর সাংগঠনিক নেতারা ঢামেকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। সেখানেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে কোনো একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে হাসপাতালে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে গেট বন্ধ করে চলতে থাকে হট্টগোল।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে একটি গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, কলেজের সামনে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি সকাল ১১টায় শেষ হয়ে যায়। অবস্থান কর্মসূচি চলার সময় সেখানে ছাত্রদের সঙ্গে কোনো কর্মচারীর কথা কাটাকাটির জের ধরেই হাসপাতালের ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে অবস্থান নিয়েছিল দুই পক্ষ।
হাসপাতাল থেকে একটি সূত্র জানায়, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে কলাপসিবল গেট বন্ধ করা হয়। সেখানে গাইনি রোগীরা ভর্তি আছেন। এছাড়া এই হট্টগোলের কারণে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মাঝে ভীতির কাজ করে। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে অনেক রোগীকেই এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
হাসপাতালে এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের পরিচালক ও কলেজ প্রিন্সিপালসহ অন্যান্যরা কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে একসাথে বসে আলাপ-আলোচনা করছে। ছাত্ররাও কলেজে ফিরে গেছে চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারীরাও যার যার কাজে ফিরে গেছেন।
এদিকে চতুর্থ শ্রেণীর সভাপতি আবু সাঈদ জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কলেজের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করার সময় ছাত্রদের সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়। তারাও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করছিলেন। এই কারণেই ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে দুই পক্ষের মধ্যে একটু উত্তেজনা ছড়ায়। বর্তমানের পরিচালক স্যারের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আমাদের এক কর্মচারী আহত হয়েছেন।
এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ আশরাফুল আলম জানান, একটি ভুল বোঝাবুঝির পরিপ্রেক্ষিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক কলেজ ও প্রিন্সিপাল টিটো মিয়া পরিস্থিতি সামাল দেন়। পরিচালক বলেন, আজকের এই পরিস্থিতির জন্য কেউ দোষী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ দেবেশ চন্দ্র তালুকদার জানান, কলেজের সামনে আউটসোসিংয়ের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিল চতুর্থশ্রেণীর কিছু কর্মচারী। এ সময় কলেজের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করছিলেন ছাত্ররা। তখন তাদের মধ্যে কিছু একটা বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। আমরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেই। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিউল ইসলাম ফুয়াদ জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে কলেজের সামনে প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার সময় সেখানে অবস্থানরত চতুর্থ শ্রেণীর লোকজন আমাদের ওপর চড়াও হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছে, দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২২
এজেডএস