বর্তমানে অনেকেই এমন কিছু যন্ত্র ব্যবহার করেন, যার মাধ্যমে নিয়মিত হৃদস্পন্দনের হার মাপা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃদস্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হৃদস্পন্দনের হার একাধিক অসুস্থতার উপসর্গ হতে পারে। হৃদস্পন্দনের হার কমে যাওয়া ও বেড়ে যাওয়া যথাক্রমে ব্রাডিকার্ডিয়া ও ট্যাকিকার্ডিয়ার লক্ষণ হতে পারে। তবে যারা পেশাগত ভাবে খেলাধুলা কিংবা শরীরচর্চা করেন তাদের হৃদস্পন্দনের হার সাধারণভাবে অপেক্ষাকৃত কম হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে হৃদস্পন্দনের হার কম হওয়ায় পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। হৃদযন্ত্রের যে অংশটি হৃদস্পন্দনের উৎস সেই সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড সঠিকভাবে কাজ না করলে হৃদস্পন্দনের হার কমে যেতে পারে। এটি হৃদরোগের অন্যতম লক্ষণ। আবার টাইফয়েডের মতো কিছু কিছু রোগের সংক্রমণের ফলেও এই হার কমে যায়। থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে কাজ না করলেও এমন ঘটনা ঘটে। রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গেলেও হৃদযন্ত্রে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আবার হৃদস্পন্দনের হার স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে গেলেও সেটি ডেকে আনতে পারে বিপদ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত যে কোনো ধরনের জ্বর বাড়িয়ে দেয় হৃদস্পন্দনের হার। সংবহনতন্ত্রের একাধিক সমস্যাও বাড়িয়ে দিতে পারে হৃদস্পন্দনের হার। রক্তাল্পতা ও হাঁপানির মতো সমস্যাও হৃদস্পন্দনের হার বাড়িয়ে দিতে পারে। কোভিডের পরেও বেশ কিছু রোগীর মধ্যে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিক হার হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ। ক্লান্তি, ঝিমুনি, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট সবই এর লক্ষণ। আবার বিশ্বে প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণই হলো হৃদরোগ। কাজেই এই ধরনের সমস্যা উপেক্ষা করা একেবারেই অনুচিত। বর্তমানে হৃদস্পন্দন মাপার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ায় প্রয়োজন হয় না। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে দিয়েই এর পরিমাপ সম্ভব। কাজেই যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
আরএ