ঢাকা : মাত্র চার মাসের জন্য দৈনন্দিন কম ক্যালোরি যুক্ত খাদ্য গ্রহণই ডায়াবেটিস টাইপ (২) এর মতো রোগ নিরাময় করতে পারে বলে নতুন একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে।
নেদারল্যান্ডসের লিডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক দাবি করেছেন, তাদের গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল জীবনব্যাপী এই ভয়াবহ রোগটির চিকিত্সার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবতন আনতে পারে।
গবেষণায় এসব গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন যে, ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে যারা বিভিন্ন ওষুধ খেয়েছেন তাদের তুলনায় যারা খাদ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন তারা তুলনামূলক ভালো থাকেন।
এমনকি ডায়াবেটিস রোগীদের জীবনরক্ষক ইনসুলিনেরও প্রয়োজন নেই যদি তারা ক্যালরির মাত্রা কমায়। এসব রোগীদের হৃদপিণ্ডের চারপাশে জমে থাকা বিপজ্জনক চর্বি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে এবং তাদের হৃদপিণ্ডের কাজও ঠিকভাবে চলছে।
বিষয়টি অত্যন্ত চমকপ্রদ উল্লেখ করে গবেষকরা জানান, খুবই সহজ উপায়ে শুধুমাত্র কম ক্যালোরিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ টাইপ (২) ডায়াবেটিস কার্যকরীভাবে প্রতিকার করে। এর প্রভাবও দীর্ঘমেয়াদী।
শীর্ষস্থানীয় একটি পত্রিকার লেখক সেবাশ্চিয়ান হ্যামার বলেন, জীবনযাপনের পদ্ধতি পরিবর্তনে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ওষুধের তুলনায় অনেক বেশি প্রভাব রাখতে পারে কম ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ।
গবেষকরা আরও বলেন, আবিষ্কারটির প্রধান বিষয় ছিল ডায়াবেটিস এবং মেদবহুল রোগী যারা মারাত্মক হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে ভুগছেন। তাদের উপর গবেষণায় গবেষকরা দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
চর্বি হার্টের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে দেয় না। বিশেষ করে মেদবহুল এবং ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের হৃদরোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ড. হ্যামার বলেন, ‘আমাদের গবেষণার ফলাফলে প্রমাণিত হয়েছে যে, মাত্র ১৬ সপ্তাহ কম ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে ওই সকল রোগীদের হৃদপিন্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও উল্লেখযোগ্য ভাবে বলা যায়, রোগীদের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘসময়ের জন্য তাদের কার্ডিওভাসকুলারের প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়নি। ’
গবেষকরা চার মাসব্যাপী দৈনন্দিন ৫০০ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে দিয়ে ১৫ জন ডায়াবেটিস (২) আক্রান্ত রোগীর হৃদপিণ্ডের সমস্যাজনিত এবং মেদবহুল রোগীদের পযবেক্ষণ করেন। এদের মধ্যে সাত জন পুরুষ এবং আট জন নারী ছিল। ফলাফলে দেখা গেছে তাদের ক্যালরির মাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা আবিষ্কৃত এই গবেষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের একজন বক্তা ড. লরনা লেওয়াড বলেন, ‘ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন এবং দুর্বল হৃদপিণ্ডের সবগুলোই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে সক্ষম। ওজন কমানো সকলের জন্য প্রয়োজনীয় যা আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৪২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১২