ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘গরিবের অ্যাম্বুলেন্স’ প্রকল্প

তৌহিদ ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘গরিবের অ্যাম্বুলেন্স’ প্রকল্প নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক চার্জে চলা মিনি অ্যাম্বুলেন্স

নওগাঁ: মানুষের বিপদে যে বাহন (অ্যাম্বুলেন্স) হুইসেল বাজিয়ে এগিয়ে যাবার কথা, সেগুলা এখন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত!

২০১৭ সালের দিকে সারা দেশের মতো নওগাঁর ৯৯ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক চার্জে চলা মিনি অ্যাম্বুলেন্সগুলো। উদ্দেশ্য ছিল, রাত-দুপুরে প্রত্যন্ত গ্রামের অসুস্থ মানুষদের দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছানো।

কিন্তু সেই উদ্দেশ্য খুব একটা সফলতা পায়নি বরং মুখ থুবড়ে পড়েছে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ আর সুব্যবস্থাপনার অভাবে অ্যাম্বুলেন্সগুলো এখন নষ্টের পথে।

জেলার বেশ কয়েকটি ইউপি ঘুরে দেখা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সগুলো পরিষদের এক কোনায় অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এরই মধ্যে মরিচা ধরে নষ্টের পথে অ্যাম্বুলেন্সগুলোর বডি। সে সময় প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ে খরচ হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। নওগাঁর ৯৯ ইউনিয়নে যার মোট খরচ দাঁড়ায় প্রায় ২১ কোটি টাকা।

নওগাঁর সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউপির বাসিন্দা সুলতানুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো দেওয়ার পর অনেক সুবিধা পেয়েছেন অসহায় গরীব মানুষ। তারা খুব অল্প খরচে জরুরিভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা এবং জেলা শহরের হাসপাতালে রোগী নিতে পারতেন। সব থেকে বড় সুবিধা হতো হাতের কাছেই এমন একটা অ্যাম্বুলেন্স থাকা। কিন্তু সেই অ্যাম্বুলেন্সের সুফল মানুষ বেশিদিন পায়নি। অল্প দিনের মধ্যই সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।  অ্যাম্বুলেন্সগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে চালকদের চরম অবহেলার কারণে এগুলো বর্তমানে প্রায় নষ্ট। চালকদের পাশাপাশি চেয়ারম্যানদেরও অবহেলা ছিল।

তিনি আরও বলেন, সরকারের এত টাকার একটি প্রকল্প দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে- এটা ঠিক না। এটির রক্ষণাবেক্ষণে কর্তৃপক্ষের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্সগুলোর এ অবস্থা হওয়ার জন্য চেয়ারম্যানদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।  

এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর উপজেলার হাসাইগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো চালাতেন পরিষদের চৌকিদাররা। একেক দিন একেক চৌকিদার এগুলো চালাতেন। ফলে সঠিকভাবে এটি ব্যবহার করা হয়নি। তবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষ অনেক উপকৃত হয়েছেন।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক (ডিসি) খালিদ মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে এ অ্যাম্বুলেন্সগুলোর প্রয়োজন ছিল অনেক। প্রথম দিকে মানুষ এর সুফল ভোগ করেছে। তবে এত দ্রুত কীভাবে গাড়িগুলো নষ্ট হলো! বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।