ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ঝরে পড়া আম থেকেই ৬ হাজার কোটি টাকা আয় সম্ভব 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
ঝরে পড়া আম থেকেই ৬ হাজার কোটি টাকা আয় সম্ভব 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঝরে পড়া আম থেকেই প্রতি বছর আয় করা সম্ভব ৬ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে আমচুর থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি, আচার থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা, কাঁচা আমের পাউডার ও আমসত্ত্ব থেকে ১ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।

এছাড়া পাকা ও শুকনো আমের পাল্প ও আমসত্ত্ব থেকেও আয় করা যাবে অনেক টাকা।  

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম গবেষণা কেন্দ্রে আম শিল্প ও আগামীর সম্ভাবনা বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য উঠে আসে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক তার স্বাগত বক্তব্যে প্রতিবছর বিরূপ আবহাওয়া ও বিভিন্ন কারণে নষ্ট হওয়া আমের ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরে বলেন, এসব আম আমরা কাজে লাগাতে পারলে জেলার অর্থনীতি একদিকে যেমন আরও সমৃদ্ধ হতো, তেমনি আমচাষিরা গত কয়েক বছর ধরে যে লোকসান গুণছেন, তা থেকে কিছুটা রেহাই পেতেন।

তিনি জেলার আমের উৎপাদনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, জেলার পাঁচ উপজেলায় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম উৎপাদিত হয় ১২ লাখ ৫৯ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন। এ জেলায় মোট ১২ জাতের আম বাগান রয়েছে। আর এসব আম উৎপাদনে কীটনাশক ব্যবহার করা হয় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার। সম্ভাবনাময় এ আম শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির পাশাপাশি আমের বহুবিধ ব্যবহার বাড়াতে হবে। আর এ জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে।
এদিকে আম গবেষণা কেন্দ্রে আয়োজিত সভায় লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, জেলায় মোট ফজলি আম উৎপাদন হয় ৭ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪০ মেট্রিক টন। সে হিসেবে ফজলি আম উৎপাদনের মোট পরিমাণ ৩ লাখ ৭ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। ক্ষিরসাপাত ৩ হাজার ৯৬৫ হেক্টরে উৎপাদন হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৭৫ মেট্রিক টন। ল্যাংড়া ৩ হাজার ১৩০ হেক্টরে উৎপাদন হয় ৯৩ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন। গোপালভোগ ১ হাজার ৬২৫ হেক্টরে ৩৫ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন আম। বোম্বাই ৯১১ হেক্টরে ২৭ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন। আশ্বিনা ৮ হাজার ৩৬৫ হেক্টরে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। লক্ষণভোগ ২ হাজার ১৫ হেক্টরে ৫০ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টন। আম্রপালি ১ হাজার ২৯৩ হেক্টরে ১৯ হাজার ৩৯৫ মেট্রিক টন।  মল্লিকা ৭০ হেক্টরে ৮৪০ মেট্রিক টন। অন্যান্য উন্নত জাত ৩ হাজার ২১৫ হেক্টরে ৪৮ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন। গুটি ২ হাজার ৪৫৯ হেক্টরে ৪৯ হাজার ১৮০ মেট্রিক টন। বারোমাসি ও নতুন বাগানের আম ১০ হাজার ২৬২ হেক্টরে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন।

জেলার এ বিপুল পরিমাণ আম উৎপাদনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে এ শিল্পকে রক্ষার জন্য উৎপাদন, বিপণন ও রপ্তানি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্যবৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার, হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. বিমল প্রামাণিক, সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্ত ড. জমির উদ্দিন এবং স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী, আম সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।