ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

শীতকালীন ফসল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদারীপুরের কৃষক

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
শীতকালীন ফসল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদারীপুরের কৃষক ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষক

মাদারীপুর: শীতের শুরুতেই শীতকালীন ফসল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদারীপুরের কৃষকরা। রবি শস্যের পাশাপাশি শীতকালীন সবজি উৎপাদনে মাঠে মাঠে ব্যস্ততা চাষিদের।

পুরো শীতের সময়ে ধারাবাহিকভাবে নানা রকম সবজি চাষ করছেন কৃষক।  

মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, লাল শাক, পালন শাক, টমেটো, গাজর, করলাসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে এসব শাক-সবজি বিক্রি হচ্ছে নিয়মিত।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই কৃষকরা মাঠে ফসলের যত্ন নিতে ব্যস্ত। কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ শাক-সবজি তুলছেন ক্ষেত থেকে। আবার কেউ ফসল বোনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কারো জমিতে মাটি তৈরি করা হচ্ছে।  

সদর উপজেলার ধুরাইল এলাকার সরদারকান্দি এলাকায় দেখা গেছে, মুলা ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করছেন কৃষক। একই জমিতে টমেটো চাষ করেছেন আব্দুর রব নামের এই কৃষক। মুলা বাজারে বিক্রির উপযোগী হতেই টমেটো ধরতে শুরু করবে। একইসঙ্গে তিনি মরিচ, ফুলকপি, পালন শাকের চাষও করেছেন।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত তিন বছর ধরে জমি লিজ নিয়ে শুধু সবজির চাষ করছি। সারা বছরই আমার জমিতে মৌসুম উপযোগী সবজি চাষ হয়। এসব সবজি স্থানীয় বাজারেই বিক্রি করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছর মুলা ও টমেটো চাষ করেছি তিন কাঠা জমিতে, ফুলকপি এবং পালন শাক চাষ করেছি পাঁচ কাঠা জমিতে।

আরেক কৃষক সোহরাব শেখ বলেন, আমি জমিতে লাল শাক, ধনিয়াপাতার চাষ করি। এ বছর বৃষ্টির কারণে অনেক ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও যা আছে, তা বিভিন্ন সময় তুলে বাজারে বিক্রি করছি। আমি প্রতি বছরই শাক-সবজির চাষ করি। এ বছর ১৪ কাঠা জমিতে শাক-সবজির চাষ করেছি।

শিবচর উপজেলার সন্যাসীর চর এলাকার মো. সুমন আহমেদ নামে এক কৃষক বলেন, চলতি বছর অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তারপরও শীতকালীন সবজি রয়েছে ক্ষেতে। মুলা, টমেটো, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিমের চাষ করেছি।

উপজেলার দত্তপাড়া এলাকার মো. ফররুখ বলেন, জমিতে এবার সরিষার চাষ করা হয়েছে। মাঘী সরিষা নামে এক জাত রয়েছে। গাছ খুব ছোট হয়। এগুলো আগাম চাষ করা হয়। জমিতে দুইজাতের সরিষার চাষাবাদ করেছি এবার। আশা করি ভালো ফলন আসবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৭শ হেক্টর জমিতে গম, ৫শ হেক্টরে ভুট্টা, ৪ হাজার ৩শ হেক্টরে দুই জাতের সরিষা, ২৫ হেক্টরে সূর্যমুখী, ৭৫০ হেক্টরে চিনাবাদাম, ১ হাজার ৫৭০ হেক্টরে মসুর, ১১শ হেক্টরে খেসারি, ৩৬শ হেক্টরে পেঁয়াজ, ২৭শ হেক্টরে রসুন চাষ করা হয়েছে। এছাড়াও কালোজিরা চাষ করা হয়েছে ১৫শ হেক্টর জমিতে, ধনিয়া ১৩শ হেক্টর এবং ১ হাজার হেক্টর জমিতে নানা রকম শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার বিস্তীর্ণ জমিতে রবিশস্যের মধ্যে সরিষা, পেঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, কালোজিরা চাষ হচ্ছে।  

এছাড়া অনেকেই শাক-সবজি চাষ করছেন নিয়মিত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জিত হবে বলে আশা করছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।